তত্ত্বাবধায়ক সরকার
তত্ত্বাবধায়ক সরকার
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হল, তত্ত্বাবধায়ক সরকার। নব্বই এর দশকের শুরুতে বাংলাদেশের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। তখন প্রশ্ন উঠেছিল কার অধীনে নির্বাচন হবে – ক্ষমতাসীন সরকার, নাকি নির্দলীয় একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার? সেই বিতর্কের অবসান হয়েছিল ১৯৯৬ সালে, যখন ক্ষমতাসীন বিএনপি প্রবল বিক্ষোভের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। সেই থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক নতুন করে মাথা-চাড়া দিয়ে উঠেছে।
নব্বই-এর দশকে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি করেছে এবং বিএনপি তাতে রাজি ছিল না। ত্রিশ বছর পরে, অবস্থাটা ঠিক উল্টে গেছে। এখন বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইছে, কিন্তু আওয়ামী লীগ বলছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিছুতেই সম্ভব নয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উৎপত্তি
১৯৯০ সালে সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের পতনের পর, সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তাঁর অধীনে ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে বিএনপি জয় লাভ করে। বিএনপি সরকার গঠনের পর থেকেই আওয়ামীলীগ ও জামাত সহ বিরোধী দলগুলো সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকারকে চাপ দিতে থাকে৷ সর্বপ্রথম জামায়াত এবং তারপর আওয়ামী লীগ ১৯৯৩ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত বিল সংসদ সচিবালয়ে পেশ করে৷ এতে বলা হয়, জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ ও নির্বাচনের সামগ্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবমুক্ত করার জন্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে সংযোজন করা উচিত৷ কিন্তু বিএনপি প্রথম থেকেই এ দাবি অসাংবিধানিক বলে অগ্রাহ্য করতে থাকে। ১৯৯৪ সালের ২৭ জুন সংসদ ভবনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা প্রদান করে৷ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ওই রূপরেখাকে অসাংবিধানিক ও অবাস্তব বলে ঘোষণা করেন৷।
পরবর্তীতে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে, ১৪৭ জন সংসদ সদস্য এক যোগে সংসদ থেকে পদত্যাগ করে। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিএনপি সরকার সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করে। কিন্তু সকল বিরোধী দল সেই নির্বাচন শুধু বর্জনই নয়, ব্যাপক বিক্ষোভের মাধ্যমে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। বিতর্কিত এই নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন বিরোধী দলগুলোর ব্যাপক আন্দোলনের মুখে, ১৯৯৬ সালের ২৬শে মার্চ তৎকালীন বিএনপি সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে চতুর্থ ভাগে “২ক পরিচ্ছদ : নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার” নামে নতুন পরিচ্ছেদ যোগ হয়৷
এরপর ১৯৯৬ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। দেশে-বিদেশে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। নির্বাচনে পরাজিত দল বিএনপি নির্বাচনে ‘পুকুর চুরির’ অভিযোগ আনলেও, তাদের সেই দাবি গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। ক্ষমতার মেয়াদ শেষ করে, ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। সে নির্বাচনে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী জোট ব্যাপকভাবে জয়লাভ করে। তখন আওয়ামীলীগ নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব এবং কারচুপির অভিযোগ আনে। কিন্তু সে অভিযোগ খুব বেশি পাত্তা পায়নি; বরং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার কয়েক বছর পর সংবিধানের বেশ কয়েকটি বিষয় সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। এই সংশোধনী গুলোর মধ্যে ছিল, সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫টি করা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ করা, এবং সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা। এসব সংশোধনীর মধ্যে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে দূরভিসন্ধিমূলক ছিল বলে অনেকে মনে করেন। কারণ সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।
২০০৩ সালে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান কে এম হাসান। তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ অভিযোগ তোলে যে, বিএনপি তাদের পছন্দসই ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা করার ব্যবস্থা করেছে। সংবিধান সংশোধনীতে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স-সীমা বাড়ানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি কেএম হাসান অবসরের পরপরই যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারেন। আওয়ামী লীগের অভিযোগ ছিল, কেএম হাসান ‘বিএনপির লোক’, তিনি বিএনপির কমিটিতে ছিলেন এবং এক সময় তিনি বিএনপি থেকে নির্বাচনও করতে চেয়েছিলেন। বিচারপতি কেএম হাসান যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে না পারেন সেজন্য ২০০৪ সাল থেকেই তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ আন্দোলন শুরু করে।
আওয়ামী লীগের আন্দোলন ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ ছিল বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে। তারা বুঝতে পারছিল যে, ২০০৭ সালের নির্বাচনে তাদের পক্ষে জয়লাভ করা সহজ হবেনা। তাছাড়া, ১৯৯১ সালের পর থেকে কোন সরকার পরপর দুইবার ক্ষমতায় আসতে পারেনি। সেকারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে নিজেদের কব্জায় রাখার মাধ্যমে বিএনপি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চেয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সহিংস আন্দোলনের মুখে বিচারপতি কেএম হাসান, ২০০৬ সালের অক্টোবর মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সংবিধান অনুযায়ী সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব না নিলে তার আগের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা। কিন্তু তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ সংবিধানের সবগুলো বিকল্প না দেখে নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ। তারপর থেকে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। আওয়ামী লীগ অভিযোগ তোলে তিনি বিএনপির দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন। এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে চারজন সদস্য পদত্যাগ করেন। আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর তীব্র আপত্তির মুখেও ২০০৭ সালের ২২ শে জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ইয়াজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তখন রাজনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করলে ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভেঙ্গে দেয়। এরপর সেনাবাহিনীর সমর্থনে নতুন আরেকটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়।
১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকার
২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি জরুরী অবস্থা জারীর মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর সমর্থনে ড: ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। ড: ফখরুদ্দিন আহমেদের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগ নেত্রী শেখ হাসিনা এবং এইচএম এরশাদসহ মহাজোটের নেতারা। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার কে আওয়ামীলীগের আন্দোলনের ফসল বলে উল্লেখ করেছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু সে সরকার এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মত প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের বহু নেতাকর্মী সহ খোদ শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করেছিল। শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বাদ দেবার জন্য তখনকার সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠে।
ক্ষমতাগ্রহণের শুরুতে তাদের ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও. তাদের রাজনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছিল এবং বাংলাদেশের পরবর্তী রাজনীতিতে তার সুদূর প্রসারী প্রভাব রয়েছে। ১/১১ র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বেশ কিছু ভালো কাজের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা। ড: ফখরুদ্দিন আহমেদের সরকার তাদের কাজের পরিধি এতটাই বিস্তৃত করেছিল যে অনেক বিষয় তাদের আওতার মধ্যে ছিলনা। রাজনীতিবিদরা নাখোশ হলেও রাজনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগকে নাগরিক সমাজের অনেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সমর্থন করেছিল। তবে অনেক বিশ্লেষক আবার মনে করেন তথাকথিত রাজনৈতিক সংস্কার চেষ্টা ব্যর্থ হবার কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এবং দলের ভেতরে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার অবস্থান আরও মজবুত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, ১/১১ র তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ড: ফখরুদ্দিন আহমেদ সরকার প্রধান হিসেবে থাকলেও, ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ। তবে মইন ইউ আহমেদ তার প্রকাশিত একটি বইতে লিখেছেন তাদের প্রতিশ্রুতি ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সব কাজে সহযোগিতা করা কিন্তু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া নয়। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের পর, অবশেষে ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন দেয়। যার মাধ্যমে সকল দলের অংশগ্রহণে দুই বছর পর দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হল কেন?
২০০৭ সালে জরুরী অবস্থা জারির মধ্য দিয়ে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিন মাসের মেয়াদ অতিক্রম করে অবৈধ ভাবে দুই বছর ক্ষমতায় থাকে। সেই সাথে দেশের রাজনীতি পরিচ্ছন্ন করার নামে এখতিয়ার বর্হিভূত অনেক কাজ করে। ড. ফখরুদ্দিন আআহমেদের সরকারের বিতর্কিত কর্মকান্ডের বাইরেও, সামগ্রিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বেশ কিছু অসুবিধা ছিল। বিচার বিভাগে রাজনীতির অশুভ প্রভাব এর মধ্যে অন্যতম। মেয়াদ শেষে কে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবে সে অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলো প্রধান বিচারপতি নিয়োগের নীলনকশা তৈরী করত। রাষ্ট্রীয় দৈনন্দিন রুটিন কাজ করার নির্দেশনা ভেঙে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নীতি নির্ধারণী কাজে জড়িত হত। এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে, ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিরোধী একটি রিট আবেদনকে সামনে নিয়ে আসে। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কে আওয়ামীলীগের আন্দোলনের ফসল এবং শেখ হাসিনার “ব্রেন চাইল্ড” বলা হয়, যে আওয়ামীলীগ ১৯৯০ এর দশকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সারাদেশ আন্দোলনে উত্তাল করেছিল, তারাই পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের জন্য তৎপর হয়। ২০১১ সালের ১০ মে বাংলাদেশে সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় দেয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে, বিরোধীদলের অংশগ্রহণ ছাড়াই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয় ।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পপরিক অবিশ্বাস, নির্বাচন কমিশনের দুর্বলতা, সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি, পরাজিত পক্ষের নির্বাচনী ফলাফল মেনে না নেওয়ার সংস্কৃতি সহ বেশ কিছু বিষয় সমাধান করতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। কিন্তু এই বিষয়গুলোর কোন ধরনের সমাধান না করেই, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধান থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
আবারো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব কিনা, এই পশ্নে আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির নেতারা বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে। আওয়ামী লীগ বলছে, এই ব্যবস্থা অসাংবিধানিক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন সম্ভব নয়। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, আইনের মধ্যে থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা সম্ভব এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।