মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামি জ্ঞান সাধনার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান মদিনা ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটি সউদি আরবের মদিনায় অবস্থিত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৬১ সালে সউদি সরকারের একটি রাজকীয় ফরমানের মাধ্যমে মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব শরী’আহ তে ইসলামিক আইন বিষয়ে পাঠদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। বর্তমানে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআন, হাদীস, শারীয়াহ, দাওয়াত এবং আরবি বিষয়ে পড়ানো হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, স্নাতোকত্তর ও ডক্টরেট এই তিন শ্রেণীতে শিক্ষাদান ও ডিগ্রী প্রদান করা হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু মাত্র মুসলিম পুরুষ শিক্ষার্থীরাই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে লেখা পড়া করে। যে কোন মুসলিম ব্যক্তি স্কলারশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় এর সকল শিক্ষার্থীর আনুষঙ্গিক ব্যয়ভার বহন করে। আরব বিশ্বে বিশ্ববিদ্যালয়টির র্যাঙকিং ৮০ থেকে ৯০ এর মধ্যে ওঠানাম করে। এবং সমগ্র বিশ্বে মদিনা ভিশ্ববিদ্যালয় ৮০০ র্যাংকিং ৮০০ এর কাছাকাছি। প্রতিদিন আসর থেকে ইশার নামাজের সময় ছাত্রদের মসজিদে নববীতে যাওয়া আসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাস সার্ভিস প্রদান করা হয়। এই বিশ্ববিধ্যালয়ের লাইব্রেরি অথ্যন্ত সম্বৃদ্ধ। এখানে দেড় লক্ষেরও বেশি বাই আছে। এছাড়াও এই লাইব্রেরিতে বহু প্রাচীন পান্ডুলিপি আছে, যা ডিজিটালি কনভার্ট করা হয়েছে। ইসলামি বিশ্বে অবদান রাখা অনেক পন্ডিত ব্যক্তি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলেন, কানাডার লেখক ও ইসলামী চিন্তাবিদ বিলাল ফিলিপস এবং জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি, শিক্ষাবিদ ও বক্তা মুফতি মেঙ্ক।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় ওয়াহাবি-সালাফিবাদী ধর্মতত্ত্ব প্রচার করে। সালাফ শব্দের শাব্দিক অর্থ পূর্বপুরুষ। আর ব্যবহারিক অর্থ ইসলামের প্রথম যুগের মানুষগণ। অর্থাৎ সাহাবী, তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈগণ, যাঁদের ব্যাপারে রাসূল (স) বলে গিয়েছেন, তাঁরা হলেন উম্মাতদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ উম্মাত। আর সালাফদের অনুসারীগণ হল সালাফি। ইসলামের প্রথম তিন যুগের মানুষ ইসলামকে যেভাবে বুঝতেন আর পালন করতেন, হুবহু তাঁদের মত করে ইসলাম বোঝা আর পালন করাকে সালাফিবাদ বলা হয়। অন্যদিকে ওয়াহাবি আন্দোলন হল, বিশুদ্ধবাদী ইসলামি পুনর্জাগরণ। সালাফি পন্ডিত মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব ইবনে তাইমিয়া এবং আহমাদ ইবনে হাম্বলের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ওয়াহাবি আন্দোলন শুরু করেন। এই মতবাদে বিশ্বাসীরা ইসলামের মূলধারা থেকে বিচ্যুতদেরকে কোরআন ও হাদিসের বর্ণিত পথে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় সালাফি ও ওয়াহাবি মতাদর্শ ধারণ করে এবং বিশ্বজুড়ে সালাফিবাদী প-িত ও প্রচারকদের পৃষ্ঠপোষকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।