ওপেনএআই এজিআই

maxresdefault (16)
জীবনযাপন

ওপেনএআই এজিআই

বর্তমান প্রযুক্তি বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত নাম ওপেনএআই সিইও স্যাম অল্টম্যান। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই এর উত্থানের জন্য সারা বিশ্বের মানুষ যেখানে চাকরি হারানোর ভয়ে ছিল। সেখানে খোদ চ্যাটজিপিটি উদ্ভাবই তার চাকরি হারানোর পর নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক হইচই শুরু হয়। মুহর্তের মধ্যেই চ্যাটজিপিটির মালিকানা কম্পানি ওপেনএআই এর বোর্ড অব ডিরেক্টরসদেরকে ভিলেন হিসেবে উপাস্থাপন করা হতে থাকে। তবে কে নায়ক আর কে ভিলেন তা নির্ধারণ করার মত সময় এখনও আসেনি। বহু বিতর্ক আর সমালোচনার পর স্যাম অল্টম্যান আবারো চ্যাটজিপিটির সিইও পদে ফিরে এসেছেন।

ওপেনএআই কম্পানির অর্ন্তঃদ্বন্দের ফলে একটি বিষয় সবার সামনে এসেছে, আর তা হল চ্যাটজিপিটির পরবর্তী এআই প্রযুক্তি। যতদূর জানা যায়, এই প্রযুক্তি বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে মানুষের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজ করতে সক্ষম হবে। যার অনেক ভালো দিক থাকলেও, এই প্রযুক্তি মানব সভ্যতার জন্য মারাত্নক হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে।

ওপেনএআই সিইও স্যাম অল্টম্যানকে কেন বরখাস্ত করা হয়েছিল, মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় আবারা কেনই বা তাকে স্বপদে বহাল করা হল এবং নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ভবিষ্যতে মানব জাতির উপর কেমন প্রভাব ফেলতে পারে?

AI মানব জাতির ভবিষ্যৎ কোথায় নিয়ে যাবে ?

সিইও বিতর্ক

চ্যাটজিপিটি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল সফটওয়্যার পরিসেবা হিসেবে উঠে এসেছে। চ্যাটজিপিটির মালিকানা কম্পানি ওপেনএআই এর বাজার মূল্য ধরা হয় ৯০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে প্রযুক্তি দানব প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে।

গত ১৭ নভেম্বর ওপেনএআই এর বোর্ড অব ডিরেক্টরস কোন ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া কম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যানকে সিইও পদ থেকে অপসারণ করে। এর কারণ হিসেবে শুধু বলা হয়েছিল যে, স্যাম অল্টম্যান ডিরেক্টরদের সাথে কম্পানির কার্যক্রম নিয়ে খেলাখুলি আলোচনা করে না। অল্টম্যানকে সরানোর পর ওপেনএআই এর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মিরা মুরাটিকে সিইও র দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯ নভেম্বর থেকে ওপেনএআই এর ৭৫০ জন কর্মী একযোগে পদত্যাগের হুমকি দিতে থাকে। ২০ নভেম্বর মাইক্রোসফট এর সিইও সত্য নাদেলা, স্যাম অল্টম্যানকে নিয়ে নতুন আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট শুরু করার ঘোষণা দেন। এবং সেই সাথে বলা হয়, অপেনএআই থেকে যারা ইস্তফা দিবে, তাদের সকলেরই মাইক্রোসফটের সাথে কাজ করার সুযোগ মিলবে। সত্য নাদেলার এই একটি টুইটের পর থেকে তাকে প্রযুক্তি বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর সিইও হিসেবে অভিহিত করা হতে থাকে। কারণ তিনি বুদ্ধি খাটিয়ে, এক পয়সা বিনিয়োগ না করেই ওপেনএআই এর মত একটি কম্পানিকে শুধু মাত্র একটি টুইটের মাধ্যমে প্রায় কিনেই ফেলেছিলেন। কারণ ওপেনএআই এর কর্মীই যদি না তাকে, আর মাইক্রোসফট যদি সিইও থেকে শুরু করে সকল কর্মীকে নিয়ে যায়, তাহলে তো মাইক্রোসফই ওপেনএআই এর মালিক।

ওপেনএআই এর কর্মকর্তারা বোর্ড ডিরেক্টরদেরকে চূড়ান্ত হুশিয়ারি দেয় যে, তারা এই বোর্ড থেকে পদত্যাগ না করলে সকলেই মাইক্রোসফটে যোগ দেবে। অবশেষে কয়েক দফা বৈঠক আর আলোচনা শেষে, ২২ নভেম্বর স্যাম অল্টম্যান ওপেনএআই এর সিইও হিসেবে পুনরায় যোগ দেন।

নেপথ্য ঘটনা

ইন্টারনেট জুড়ে যখন ওপেনএআই সিইও নিয়ে বিতর্ক চলছিল; তখন সবাই স্যাম অল্টম্যানকেই সমর্থন করছিল। এর পেছনে অন্যতম কারণ ছিল, অল্টম্যানকে বরখাস্ত করার জন্য যে কারণ দেখানো হয়েছিল, তা ছিল খুবই ঠুনকো। এবং আসলে কি কারণে বোর্ড এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সে বিষয়টিও তারা পরিষ্কার করতে চাইছিল না।

ওপেনএআই এর পক্ষ থেকে বলা হয়, আর্থিক মুনাফা অর্জন তাদের মূল উদ্দেশ্য নয়, তাদের লক্ষ্য হল মানবজাতির জন্য নিরাপদ এবং উপকারী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা। ওপেনএআই একটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী কম্পানি। সেকারণেই তারা হেলেন টোনারের মত একজনকে তাদের বোর্ডে রেখেছিলেন। টোনার জর্জটাউন সেন্টার ফর সিকিউরিটি এন্ড এমার্জিং টেকনোলজির কৌশল পরিচালক হিসবে কাজ করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি নতুন প্রযুক্তির নিরাপত্তার বিষয়গুলো দেখভাল করে। যাদের আপত্তির মুখে স্যাম অল্টম্যানকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, হেলেন টোনার তাদের মধ্যে অন্যতম। অবশেষে অল্টম্যান সিইও হিসেবে প্র‌ত্যাবর্তনের পর, হেলেন কে ওপেনএআই এর বোর্ড থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

পরবর্তীতে ওপেনএআই এর এক কর্মকর্তা তার পরিচয় গোপন রেখে জানায়, বোর্ড অব ডিরেক্টরস আসলে বিভিন্ন কারণে স্যাম অল্টম্যানকে দ্বায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কম্পানিটির উদ্ভাবিত এআই প্রযুক্তির চূড়ান্ত পরিণতি কেমন হবে, তা বুঝে ওঠার আগেই নাকি বানিজ্যিকীকরণের চেষ্টা করা হচ্ছিল। তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি বিষয় জানা যায়; তা হল ওপেনএআই সম্পূর্ণ নতুন ধরনের একটি এআই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এই প্রকল্পের নাম প্রজেক্ট Q*। কম্পানিটির অনেকেই মনে করেন এই প্রকল্প কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ধারণা সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে। অভিযোগ উঠেছিল যে, স্যাম অল্টম্যান কম্পানির বোর্ড কে না জানিয়েই এধরনের স্পর্শকাতর প্রকল্পের অগ্রগতি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

প্রজেক্ট Q*

বর্তমানে চ্যাটজিপিটি যে পদ্ধতিতে কাজ করে তাকে বলা হয় AI বা Artificial Intelligence। কিন্তু প্রজেক্ট কিউ স্টার এর মাধ্যমে যে পদ্ধতি গড়ে তোলা হচ্ছে, তাকে বলা হয় AGI, যার অর্থ Artificial General Intelligence। ওপেনএআই এর ভাষ্যমতে, এজিআই হবে স্বাধীন এক ব্যবস্থা, যা মানুষের সাহায্য ছাড়াই অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে পারবে।

বর্তমানে চ্যাটজিপিটিকে কোন প্রশ্ন করা হলে, সে অতীতের বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করে অনুমান নির্ভর উত্তর দেয়। এই কাজটি করার মধ্য দিয়ে এই রোবট নিজে নিজে প্রশিক্ষিত হয়, এবং পরের বার আরো উন্নত সামাধান দেওয়ার জন্য কাজ করে। যেহেতু ফলাফল গুলো অনুমান ভিত্তিক, তাই চ্যাটজিপিটিকে একই প্রশ্ন বার বার করা হলে, প্রতিবারই সে ভিন্ন ভিন্ন উত্তর দেয়। কিন্তু প্রজেক্ট Q* এর উদ্দেশ্য হল এজিআই কে এমনভাবে গড়ে তোলা; যেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনুমানের উপর ভিত্তি করে নয়, যাচাই করে শুধুমাত্র একটি সঠিক উত্তর দিতে পারে। এই কাজটি করার জন্য এজিআই কে গণিতের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কারণ গাণিতিক সম্যসার ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র একটি সঠিক উত্তর হতে পারে।

AGI এর দক্ষতা

বর্তমান সময়ের জেনারেটিভ এআই শুধুমাত্র লেখা এবং অনুবাদের কাজে দক্ষতা দেখাচ্ছে। কোন শব্দ লেখা হলে এর পরের শব্দ কি হবে তা অনুমান করতে তারা পারদর্শী। গবেষকরা বলছেন, জেনারেটিভ এআই যদি গাণিতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা অর্জন করে, তাহলে মেশিনগুলো মানুষের মত যুক্তিযুক্ত বুদ্ধিমত্তা অর্জন করবে। এর মাধ্যমে নতুন বৈজ্ঞানিক গবেষণা আরো সহজ হবে। সাধারণ ক্যালকুলেটরের সাথে জেনারেটিভ এআই এর পার্থক্য হল, ক্যালকুলেটরের গাণিতিক সমাধান বের করার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ, কিন্তু এজিআই নিজে নিজে গণিত শিখতে পারে, বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী সমাধান করতে পারে। তবে এর প্রকৃত ক্ষমতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় নি। ধারণা করা হয় এই প্রযুক্তি বর্তমানে একজন হাইস্কুল শিক্ষার্থীর পর্যায়ের গণিত সমাধান করতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি কোথায় যাবে, তা কল্পনাও করা যায় না।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষকরা এই প্রযুক্তির ভয়ঙ্কর দাপট এবং সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তিত। কম্পিউটার বিজ্ঞানীরাও দীর্ঘদীন যাবৎ এ ধরনের অতি বুদ্ধিমান মেশিনের উত্থানের বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করে আসছিলেন। মেশিন যদি নিজে নিজে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা অর্জন করে, তাহলে তা মানব জাতির ধ্বংস নিয়ে আসার সম্ভবনাও তৈরী করতে পারে।

বর্তমানে আমরা যে এআই দেখছি, তা অনেকটাই অপরিণত। এখনও পর্যন্ত এআই এর মান নির্ধারণের কোন ব্যবস্থা নেই, এআই নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন পেশাদার সংস্থা নেই এমনকি কোন এআই সেবা সবার জন্য উন্মুক্ত করা উচিত কিনা সে ধরনের কোন সার্টিফিকেশনেরও ব্যবস্থা নেই। এআই নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজেদের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে কাজ করছে এবং এর জন্য তারা নিজেরাই কিছু নৈতিকতা নির্ধারণ করে নিয়েছে। কিন্তু এআই এর মত বিপুল সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি উন্মোচনের ক্ষমতা গুটি কতক মানুষের হাতে বন্দী রয়েছে। তারা সত্যিকার অর্থেই মানবজাতির স্বার্থে কাজ করছে নাকি নিজেদের স্বার্থে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

AGI এর ভবিষ্যৎ

প্রথম স্মার্টফোন বাজারে এসছিল ১৯৯২ সালে। কিন্তু মাত্র দুই দশক আগেও আমাদের জীবনে স্মার্টফোনের কোন অস্তীত্বই ছিল না। পরবর্তীতে ২০১০ থেকে ১৫ সালের মধ্যে, মাত্র ৫ বছরের ব্যবধানে এই প্রযুক্তি এমন বিস্তার লাভ করেছে যে, এখন আমাদের স্মার্টফোন ছাড়া চলেই না। আপনি চাইলেও এখন স্মার্টফোন বাদ দিতে পারবেন না। কারণ আমাদের অনেকেরই চাকরী, ব্যবসা সহ জীবন জীবিকা জড়িয়ে পড়েছে এই প্রযুক্তি পণ্যের সাথে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখনও পূর্ণাঙ্গ পণ্য বা সেবা আকারে আত্নপ্রকাশ করতে পারেনি। তাই বলে, এআই কোন ভবিষ্যতের প্রযুক্তি নয়। এআই আসছে না, এআই ইতোমধ্যে এসে গেছে। এবং সময়ের সাথে সাথে তার অবস্থান পাকাপোক্ত করছে। স্মার্টফোনের ধারণা পৃথিবী ব্যাপি ছড়িয়ে পড়তে, এবং সাধারণ মানুষের ব্যহার উপযোগী হতে যেমন কিছু সময় লেগেছিল; এআইও তার সকল ফিচার নিয়ে, পুরোদস্তুর ব্যবহার উপযোগী পণ্য হওয়ার জন্য কিছু সময় লাগাটা খুবই স্বাভাবিক। তবে অতীতের যে কোন প্রযুক্তির চেয়ে এআই এর উত্থান হচ্ছে সবচেয়ে দ্রুত।

এরই মধ্যে আমরা অনেকেই নিয়মিত এআই ব্যবহার করছি, বাকিরা হয়ত শুধু নাম শুনেছি, ব্যবহার করার সুযোগ হয়নি; বা দরকারও পরেনি। কিন্তু নিশ্চিত থাকতে পারেন আগামী ৫ বছরের মধ্যে অথবা ৫ বছর পরে, একজন সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরও এআই রিলেটেড সার্ভিস ব্যবহার করা নিত্যপ্রয়োজনীয় বিষয়ে পরিণত হবে এবং আপনি এর উপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য হবেন।

ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি পৃথিবীকে কী আরো নিরাপদ করবে, নাকি মানব সমাজকে ঠেলে দিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, সেটিই দেখার বিষয়। সে হিসেবে হয়ত স্যাম অল্টম্যান হবেন প্রযুক্তি জগতে অপেনহাইমারের কিংবদন্তি। অপেনহাইমার দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ বন্ধ করার স্বার্থে আমেরিকানদের জন্য পারমানিবিক বোমা আবিষ্কার করে, বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন ঠিকই; কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সেই মহান আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি তৈরী করেছে। তারপর থেকেই বিজ্ঞানের সুফল এবং কুফলের মধ্যে বিতর্ক উঠলে, পারমানবিক শক্তি আবিষ্কারের কথা আসে সবার আগে।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *


দিন
ঘণ্টা
মিনিট
সেকেন্ড
আমাদের লাইভ ক্লাস শেষ হয়েছে, তবে আপনি এখন ফ্রি রেকর্ডেড কোর্সে ইনরোল করে দেখতে পারবেন।
আপনার রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আপনার জন্য একটি একাউন্ট তৈরি হয়েছে। প্রদত্ত ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

কোর্সের তারিখ: ০৩/১০/২০২৫
সময়: রাত ৯টা থেকে
(বাংলাদেশ সময়)

আপনার সঠিক - নাম, ইমেইল দিয়ে
Sign Up এ ক্লিক করুন।