সোমালিয়ানরা জলদস্যু হয়ে উঠল কেন

maxresdefault (3)
কি কেন কিভাবে

সোমালিয়ানরা জলদস্যু হয়ে উঠল কেন

বৈশ্বিক সমুদ্র বানিজ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ একটি এলাকা হল সোমালিয়ার উপকূল। আরব সাগর আর লোহিত সাগরের ঠিক মাঝামাঝি এলাকায় সোমালিয়ার অবস্থান। ২০০০ সালের শুরুর দিকে এই অঞ্চলে একের পর সোমালি জলদস্যুদের দুর্ধর্ষ জাহাজ ছিনতাই এর ঘটনা বিশ্ব গণমাধ্যমে উঠে আসতে থাকে। কিন্তু আফ্রিকার দারিদ্রপিড়ীত একটি দেশ কেন, জলদস্যুতার মত এমন ভয়ানক পেশায় জড়িয়ে পড়ল, সে সম্পর্কে খুব কমই আলোচনা করা হয় না। শুধু তাই নয়, এই অঞ্চলে দস্যুবৃত্তির কারণে, সোমালিদের চেয়ে পশ্চিমা কম্পানিগুলোই বেশি লাভবান হয়েছে।

সোমালিয়ার জলদস্যু জাহাজ ছিনতাই করে কিভাবে ?

সোমালিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা

সোমালিয়ার উপকূলভাগে জলদস্যুতা শুরু হবার প্রেক্ষাপট তৈরী হয়েছিল বিগত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে। সেসময় সোমালিয়ার সামরিক স্বৈরশাসক মোহামদ সাইদ বারির দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের আমলে দেশটিতে ভয়াবহ রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। সোমালিয়া দেশটি বহু গোত্র এবং উপগোত্রে বিভক্ত। এবং এসব প্রতিটি গোত্রেরই নিজস্ব ঐতিহ্য, সামাজিক কাঠামো এবং আঞ্চলিক সীমানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বারি বিভিন্ন গোত্রের মধ্য থেকে কিছু কিছু গোত্রকে প্রাধান্য এবং বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কারণে, অন্যরা তার উপর ক্ষেপে ওঠে। তাছাড়া ১৯৮০ এর দশকে সোমালিয়ায় তৈরী হওয়া ভয়াবহ খরা এবং খাদ্য সংকটের কারণে দেশে আগে থেকেই ব্যাপক মানবিক সঙ্কট তৈরী হয়েছিল। সব মিলিয়ে সোমালিয়া দেশটির রাজনৈতিকভাবে টিক থাকাটাই একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠে।

অন্যদিকে মোহামদ সাইদ বারির সরকার সমগ্র দেশের কর্তৃত্ব নিতেও বারবার ব্যার্থ হচ্ছিল। কারণ সোমালিয়ার উত্তর দিকে Somali National Movement বা (SNM) এবং দক্ষিণ দিকে United Somali Congress বা (USC) নামে আলাদা দুটি সশস্ত্র দল দেশটির বিস্তৃত অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। প্রধান দুটি সামরিক গোষ্ঠী ছাড়াও ছোট ছোট আরো বেশ কিছু দল সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, দেশজুড়ে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। অবশেষে ১৯৯১ সালে ইউনাইটেড সোমালি কংগ্রেস দেশটির রাজধানী মোগাদিসু দখল করে নেয় এবং এর মধ্য দিয়ে বারি সরকারের পতন ঘটে।

জলদস্যুতার উৎপত্তি

নব্বই এর দশকের শেষের দিকে দেশ জুড়ে চলা ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ শেষে, সোমালিয়া যখন ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়; তখন বিদেশীরা এর ফায়দা নিতে শুরু করে। সোমালিয়ার সরকার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার পর থেকে সোমালিয়ার সমুদ্রসীমায় ইউরোপীয় বহু জাহাজ ঘোরাফেরা করতে শুরু করে। তারা সোমালিয়া উপকূলের কাছে তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য খালাস করতে থাকে। এর ক্ষতিকর প্রভাব সোমালিয়ানরা তখনই বুঝতে পারে, যখন উপকূলীয় অধিবাসীরা অসুস্থ হতে শুরু করে। প্রথম প্রথম তারা নানা রকম অদ্ভুদ রোগে আক্রান্ত হয় এবং এক পযাের্য় গভর্বতী সোমালী নারীরা বিকলাঙ্গ শিশু প্রসব করতে শুরু করে। ২০০৫ সালের সুনামির পর, হাজার হাজার পরিত্যক্ত ও ফুটো ব্যারেলে সোমালিয়ার উপকূল ভরে যায়। এসব বর্জ্য বেশিরভাগই আসে ইউরোপীয় হাসপাতাল ও কারখানাগুলো থেকে। ইতালিয়ান মাফিয়াদের মাধ্যমে সস্তায় তারা এসব বর্জ্য সোমালিয়ার সমুদ্র সীমায় খালাস করে। নানা ধরনের পারমানবিক উপাদান, সীসা, ক্যাডমিয়াম ও মাকাির্র র মত ক্ষতিকর পদার্থ সোমলিয়ার পানিতে মিশে যায়। এর ফলে সেমালিয়ার উপকূলবর্তী জনগণ মারাত্নক তেজষ্ক্রিয়তায় ভুগতে থাকে। সোমালিয়ার জলসীমায় এসব তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য ফেলা বন্ধ করা তো দূরের কথা, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারেও কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি ইওরোপীয় সরকারগুলো।

একইসময়ে অন্য কিছু ইউরোপীয় জাহাজ সোমালিয়ার সমুদ্র লুট করতে শুরু করে। হত দরিদ্র সোমালিয়ার প্রধান সম্পদ তাদের সামুদ্রিক মাছের ভান্ডার। ইউরোপ থেকে আগত অত্যাধুনিক মাছ ধরার জাহাজগুলো প্রতিবছর প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সামুদ্রিক মাছ ধরে নিয়ে যেতে থাকে। অন্যদিকে সোমালিয়ার সাধারণ জেলেরা তাদের ছোট নৌকা ব্যবহার করে তেমন কোন মাছই ধরতে পারে না। স্থানীয় জেলেরা দেখতে পায় তাদের সমুদ্র দিন দিন মাছ শূণ্য হয়ে পড়ছে। সে পরিস্থিতিতে সাধাসিধে এসব জেলেরা তাদের স্পিডবোট নিয়ে বর্জ্য ফেলা ও মাছ ধরার জাহাজ গুলোকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। বেআইনী মাছ ধরা এবং উপকূল দূষণ থামানোর জন্য জাহাজগুলোর ওপর ‘ট্যাক্স’ বসানোরও চেষ্টা চলে। কিন্তু কিছুতেই কোন কাজ হচ্ছিল না। এক পর্যায়ে তারা National Volunteer Coastguard of Somalia এবং Somali Marines নামে আলাদা দুটি বেসরকারী উপকূল প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তোলে। এসব বাহিনী বর্জ্য ফেলা অবস্থায় বেশ কিছু জাহাজ আটক করে। বর্জ্যবাহী জাহাজ আটকের মধ্য দিয়ে তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। এক পযার্য়ে এসব জেলেরা বুঝতে পারে যে, জাহাজগুলিকে তাড়িয়ে দেওয়া বা ট্যাক্স সংগ্রহ করার চেয়ে জাহাজ ছিনতাই করে মুক্তিপণ আদায় করা অনেক বেশি লাভজনক। তাই সোমালিয়ার সুযোগ সন্ধানী একটি অংশ জাহাজ ও নাবিকদের আটক করে মুক্তিপণ আদায় করার মাধ্যমে ভয়ংকর জলদস্যু মাফিয়া নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে।

সমুদ্র সম্পর্কে পযাপ্ত জ্ঞান ও দক্ষতা থাকার কারণে স্থানীয় জেলেরা এবং পূর্ববর্তী সরকার বা স্থানীয় সম্প্রদায়ের হয়ে যুদ্ধ করা সাবেক সেনা সদস্যরা মিলে সহজেই কুখ্যাত জলদস্যু দল গড়ে তুলতে থাকে। এসব জলদস্যুরা স্থানীয় জনগণের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। প্রায় ৭০ ভাগ সোমালিয় মনে করে জলদস্যুতাই তাদের সমুদ্র প্রতিরক্ষার জাতীয় কৌশল।

জাহাজ ছিনতাই

এশিয়ার দেশগুলো ইউরোপের সাথে বানিজ্য করতে চাইলে, ভারত ও আরব সাগর দিয়ে সুয়েজ খাল অতিক্রম করেই কেবল ভূমধ্য সাগরে পৌছানো সম্ভব। তাই এই পথে চলা জাহাজগুলিকে সোমালিয়ার উপকূল অতিক্রম করতেই হয়। ১৯৯১ সালের পর থেকে জলদস্যুতা শুরু হলেও, ২০০৫ সাল থেকে মূলত সোমালি জলদস্যুরা বৃহৎ পরিসরে সংঘবদ্ধ আক্রমণ শুরু করে। এ সময় থেকে তারা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ব্যবহার শুরু করে। মোবাইল ফোন, স্যাটেলাইট ফোন, জিপিএস, সোলার সিস্টেম, আধুনিক স্পিডবোট, অ্যাসল্ট রাইফেল, শটগান, গ্রেনেড লঞ্চারসহ অত্যাধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে তারা আক্রমণ চালায়। গভীর সমুদ্রে দস্যুবৃত্তির ক্ষেত্রে তারা একটি মাদারশিপ থেকে অভিযান পরিচালনা করে, আর বড় জাহাজ গুলোর কাছে পৌছাতে তারা দ্রুত গতির ছোট ছোট মটর চালিত নৌকা ব্যবহার করে। আক্রমণকারী এসব স্পিডবোটে, ভারী অস্ত্র ও স্যাটেলাইট ইকুইপমেন্টের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি থাকে নৌকার ইঞ্জিনের জ্বালানী। কারণ কখনও কখনও টানা ২/৩ দিন পর্যন্ত তাদের টার্গেট জাহাজের পেছনে ধাওয়া করতে হয়।

দস্যুদের নৌযানগুলো জাহাজের দিকে আসতে দেখলে নাবিকরা গরম পানি স্প্রে করা সহ, নানা রকমের প্রতিরক্ষা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু কার্গো জাহাজ গুলোতে কোন ধরনের প্রাণঘাতী অস্ত্র বা নিরাপত্তা কর্মী থাকে না। কারণ অধিকাংশ দেশের বন্দরেই পণ্যবাহী জাহাজে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী থাকার বিষয়টি অনুমোদন করা হয় না। সেই সাথে এই পথ দিয়ে যাতায়াতকারী জাহাজগুলোতে অস্ত্র না থাকার আরেকটি কারণ হল, জাহাজে কোন ধরনের অস্ত্র থাকলে সুয়েজ খাল অতিক্রম করতে দেওয়া হয় না।

জাহাজ আক্রমণের সময় হিসেবে জলদস্যুরা সাধারণত রাত বা ভোরের দিকটা বেছে নেয়। আক্রমণকারী স্পিডবোট অতিরিক্ত ছোট হওয়ায় বড় জাহাজ গুলোর রাডারে সহজে ধরা পড়েনা। রাতের অন্ধকারে জলদস্যুরা যখন এই নৌকা গুলো ব্যবহার করে জাহাজের দিকে এগিয়ে আসে তা স্বভাবতই জাহাজের ক্রু’দের নজর এড়িয়ে যায়। ফলে জাহাজ গুলো তাদের নাগালে আসতেই তারা হঠাৎ আক্রমণ করে বসে। জলদস্যুরা সাধারণত জাহাজের পেছন দিক থেকে আক্রমণ করে। অতিরিক্ত উচ্চতার বিশালাকার পণ্যবাহী জাহাজগুলো পুরোপুরি ভর্তি অবস্থায় অনেকটা ধীর গতিতে চলে। এই কারণে জাহাজগুলো আক্রমণ করা তাদের জন্য আরো সহজ হয়ে যায়। এক মাথায় হুক লাগানো লম্বা মই বা দড়ি বেয়ে তারা দ্রুত জাহাজে উঠে যায়। জলদস্যুরা জাহাজে উঠে সকলকে জিম্মি করে ফেলে। এই কাজ গুলো তারা এতো দ্রুত করে যে জাহাজের ক্রু’রা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা সবকিছু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।

মুক্তিপণ আদায়

সোমালি জলদস্যুরা জাহাজের ওঠার পর থেকে জাহাজের মালিকানা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ শুরু করে। মুক্তিপণ আদায়ের দর কষাকষি করার জন্য জলদস্যুদের আলাদা এজেন্ট থাকে। এই এজন্টের উপর বিশেষ চাপ থাকে, যেন সে জাহাজ মালিক পক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করতে পারে। অধিকাংশ জাহাজ কম্পানিগুলোর “অপহরণ ও মুক্তিপণ বীমা” করা থাকে। তাই মুক্তিপণ নির্ধারণের জন্য বীমা কম্পানিও একটি আলাদা নেগোশিয়েটর কম্পানিকে দ্বায়িত্ব দেয়। উভয় পক্ষ ঐক্যমতে পৌছার পর, অন্যকোন বেসরকারি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানকে মুক্তিপণের টাকা পৌছানোর দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত সোমালি জলদস্যুরা সর্বোচ্চ ১৩.৫ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ আদায় করেছে। জাহাজ জলদস্যুদের কাছ থেকে ছাড়াতে, মুক্তিপণের বাইরেও মধ্যস্থদাকারী কম্পানিগুলোর ফি বাবদ, জাহাজ মালিকানা প্রতিষ্ঠানকে আরো অতিরিক্ত ১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ খরচ করতে হয়।

মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে জলদস্যুরা সাধারণত জাহাজের বন্দীদের হত্যা করা থেকে বিরত থাকে। তবে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন নাবিক, জলদস্যুদের কাছে বন্দী অবস্থায় মারা গিয়েছে।

জলদস্যুতার অর্থনীতি

একটা সময় জলদস্যুতা সোমালিয়ার অথর্নীতির মূল চালিকা শক্তিতে পরিণত হয়েছিল। সোমালি জলদস্যুদের একেকটি হামলা পরিচালনা বেশ ব্যয়বহুল। জাহাজ ছিনতাই করার জন্য বহু বিনিয়োগকারী অর্থ লগ্নি করে। শুধু তাই নয়, সোমালি জলদস্যুদের নিজস্ব স্টক এক্সচেঞ্জও আছে। সোমালিয়ার ৭২ টি জলদস্যু দলের সমন্বয়ে এই স্টক মার্কেট গড়ে উঠেছে। অন্যান্য দেশের শেয়ার মার্কেটে যেভাবে বিনিয়োগ করা হয়, জলদস্যুদের স্টক মার্কেটেও একইভাবে বিনিয়োগ হয়ে থাকে। তবে পার্থক্য হল, এই শেয়ার বাজারে টাকার পরিবর্তে AK-47 বন্দুক, গ্রেনেড লঞ্চার সহ নানা ধরনের অস্ত্র দিয়েও শেয়ার কেনা যায়। জলদস্যুদের আক্রমণগুলোর মধ্যে সফলতার হার মাত্র ০.২ শতাংশ। তাই এটি অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ হলেও, একবার সফল হলে বিপুল পরিমাণ অর্থ লাভ করা যায়।

যারা কষ্ট করে ছিনতাই করার কাজটি করে, তারা খুব বেশি টাকা পায় না। জলদস্যুরা আসলে এই ব্যবসার শ্রমিক মাত্র। তাদের চেয়ে বেশি টাকা পায় হামলা পরিচালনাকারী গোষ্ঠীর শীর্ষ মাফিয়া এবং তাদের দলে বিনিয়োগকারীরা। জাহাজ ছিনতাই করে মুক্তিপণ আদায় করে, সবার ভাগের টাকা নেবার পর যা অবশিষ্ট থাকে, তা দিয়ে জলদস্যুরা নিজেদের এলাকায় স্কুল, হাসপাতালের মত নানা জন সেবামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে। সেকারণে সোমালিয়ার স্থানীয় জনগণের মাঝে জলদস্যু মাফিয়ারা বেশ জনপ্রিয়।

২০০০ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সোমালিয়ার জলদস্যুরা প্রায় ৭ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রি তৈরী করেছে। যদিও এই বিপুল পরিমাণ অর্থের মাত্র ২ শতাংশ জলদস্যু এবং তাদের পরিচালনাকারী মাফিয়ারা পেয়েছে। কারণ এই অর্থের সিংহভাগ গিয়েছে জাহাজের বীমা এবং সমুদ্র প্রতিরক্ষা কম্পানিরগুলোর কাছে। বরাবরের মতই অতি ধূর্ত পশ্চিমারা সুযোগের স্বদব্যবহার করতে ছাড়েনি। ২০১০ সালে সোমালি জলদস্যুরা মুক্তিপণ হিসেবে পেয়েছিল ১৪৮ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ওই বছর বিভিন্ন বীমা কম্পানি জাহাজ মালিকদের কাছ থেকে জলদস্যু সুরক্ষা হিসেবে ১.৮৫ বিলিয়ন ডলার আদায় করেছে। এর বাইরে জাহাজের নিরাপত্তা সামগ্রী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো জাহাজ মালিকদের কাছে ১.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সিকিউরিটি ইকুইপমেন্ট বিক্রি করেছে। তারমানে দস্যুবৃত্তির কারণে, সোমালিদের চেয়ে পশ্চিমা কম্পানিগুলোই বেশি লাভবান হয়েছে।

২০১৩ সালের পর থেকে, জাতিসংঘ, ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন দেশের সম্মিলিত সামরিক হস্তক্ষেপের কারণে জলদস্যুদের কাযর্ক্রম অনেকটাই কমে আসে। পরবর্তী কয়েক বছর এই দস্যুতা দমন করা সম্ভব হলেও, ২০১৭ সালের পর থেকে আবারো সোমালি জলদস্যুদের দৌরাত্ন বাড়তে থাকে।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *


দিন
ঘণ্টা
মিনিট
সেকেন্ড
আমাদের লাইভ ক্লাস শেষ হয়েছে, তবে আপনি এখন ফ্রি রেকর্ডেড কোর্সে ইনরোল করে দেখতে পারবেন।
আপনার রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আপনার জন্য একটি একাউন্ট তৈরি হয়েছে। প্রদত্ত ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

কোর্সের তারিখ: ০৩/১০/২০২৫
সময়: রাত ৯টা থেকে
(বাংলাদেশ সময়)

আপনার সঠিক - নাম, ইমেইল দিয়ে
Sign Up এ ক্লিক করুন।