পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি

maxresdefault (10)
জীবনযাপন

পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি

ভূমিকা

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে সৌদি আরব ও পাকিস্তান একটি যুগান্তকারী প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। রিয়াদের আল ইয়ামামা প্রাসাদে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের উপস্থিতিতে এই “যৌথ কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি” স্বাক্ষরিত হয়। ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, এক দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনকে উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে ধরা হবে।

এই প্রতিরক্ষা চুক্তিতে ভবিষ্যতে অন্যান্য আরব দেশও যুক্ত হতেক পারে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, এটি এক ধরনের ইসলামিক ন্যাটো এর মত নতুন শক্তির ভারসাম্য তৈরী করতে পারে। যা ভবিষ্যতে শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, বরং সমগ্র বৈশ্বিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে।

পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি কি ইসলামিক ন্যাটের সূচনা ?

সৌদি-পাকিস্তান ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব

স্বাধীনতার পর পাকিস্তানকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম দিকের দেশগুলোর একটি হলো সৌদি আরব।   ১৯৫১ সালে দুই দেশ প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে একটি “বন্ধুত্ব চুক্তি” স্বাক্ষর করে, যা ভবিষ্যতের সব ধরনের রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভিত্তি হয়ে ওঠে।

১৯৬৭ সাল থেকে পাকিস্তানি সেনারা নিয়মিতভাবে সৌদি সেনাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রায় আট হাজার সৌদি সেনা পাকিস্তানি সেনাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। শুধু প্রশিক্ষণই নয়, পাকিস্তানি সামরিক পরামর্শক ও সেনারা দীর্ঘ সময় সৌদিতে মোতায়েন থেকেছে। এর ফলে সৌদি সেনাদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ার পাশাপাশি দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে নিবিড় বন্ধন গড়ে ওঠে।

১৯৭৯ সালে মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামে যখন সশস্ত্র জঙ্গিরা দখল করে নেয়, তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে সৌদি বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি সেনারাও অংশ নেয়। তারা একসঙ্গে অভিযান চালিয়ে পবিত্র স্থান পুনরুদ্ধার করে, যা ইতিহাসে দুই দেশের সামরিক সহযোগিতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।

সামরিক ক্ষেত্র ছাড়াও অর্থনৈতিক সহযোগিতায় সৌদি আরব বারবার পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে। যখনই পাকিস্তান অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে, সৌদি আরব তেল সরবরাহে ছাড় দিয়েছে, ঋণ দিয়েছে এবং সরাসরি আর্থিক সহায়তাও দিয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ ও ২০২৪ সালে সৌদি আরব কয়েক বিলিয়ন ডলার পাকিস্তানের রিজার্ভে জমা দেয়, যাতে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রা সংকট সামাল দেওয়া যায়।

ফলে, সৌদি আরব ও পাকিস্তানের সম্পর্ক কেবল রাজনৈতিক বা সামরিক পর্যায়ে সীমিত নয়; বরং তা বহু দশকের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ আস্থা, ধর্মীয় বন্ধন এবং পারস্পরিক সহায়তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এই ঐতিহাসিক বন্ধুত্বই ২০২৫ সালের প্রতিরক্ষা চুক্তিকে স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত করে তুলেছে।

সৌদি আরব কেন পাকিস্তানের সাথে এই চুক্তি করল?

সাম্প্রতিক সময়ের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি সৌদি আরবকে নতুন নিরাপত্তা কৌশল খুঁজতে বাধ্য করেছে। বিশেষ করে কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলি হামলা, গাজায় চলমান সংঘাত এবং ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সৌদি নেতৃত্বের জন্য এক বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সৌদি আরব একদিন ভেবে এসেছিল যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বই হয়ত, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। কিন্তু কাতারে কয়েক হাজার মার্কিণ সেনার অবস্থান এবং মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থাকা সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের কাতার হামলা বন্ধ করতে পারেনি। তাই যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল সৌদি আরবের এখন সেই আস্থায় ফাটল দেখা যাচ্ছে।

অর্থনৈতিকভাবে সৌদি আরব বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ হলেও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতা ও সামরিক সক্ষমতা সীমিত। বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে উন্নত অস্ত্র কেনা হলেও তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করার মতো যুদ্ধ-অভিজ্ঞতা সৌদি বাহিনীর নেই। বিপরীতে পাকিস্তান অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত হলেও তাদের হাতে রয়েছে একদিকে পারমাণবিক শক্তি, অন্যদিকে দীর্ঘদিনের যুদ্ধ ও সংঘাতে পরীক্ষিত সেনাবাহিনী। পাকিস্তান আফগান যুদ্ধ থেকে শুরু করে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত পর্যন্ত নানা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে, যা সৌদির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।

সৌদি আরবের আরেকটি কৌশলগত চিন্তা হলো মুসলিম বিশ্বের ভেতরে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা জোট গড়ে তোলা। পাকিস্তান যেহেতু মুসলিম বিশ্বের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, তাই সৌদির কাছে এটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। পাকিস্তানও আর্থিক সংকট সামলাতে সৌদি সহায়তা প্রয়োজন করছিল। ফলে, অর্থনৈতিক স্বার্থ আর নিরাপত্তা স্বার্থ—উভয় দেশের প্রয়োজন একে অপরকে পরিপূরক করেছে।

এই কারণে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে স্বাক্ষরিত যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি সৌদি আরব ও পাকিস্তানের জন্য ছিল সময়োপযোগী এবং কৌশলগতভাবে অপরিহার্য। এটি শুধু পারস্পরিক প্রতিরক্ষা জোরদারই নয়, বরং আরব উপসাগর ও দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন শক্তির সমীকরণ দাঁড় কারিয়েছে।

চুক্তির বিস্তারিত

সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই “যৌথ কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি”কে অনেক বিশ্লেষক মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক নতুন নিরাপত্তা কাঠামোর সূচনা হিসেবে দেখছেন। চুক্তির ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে—যদি কোনো একটি দেশের ওপর আক্রমণ হয়, তবে সেটিকে দুই দেশের ওপরই আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে। অর্থাৎ, উভয় দেশ পরস্পরের নিরাপত্তাকে নিজেদের নিরাপত্তার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিল।

এই চুক্তির অধীনে দুই দেশের স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনী একে অপরের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করবে। যৌথ সামরিক মহড়া আয়োজন, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বিনিময়, এবং সেনাদের প্রশিক্ষণে সহযোগিতা বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদ, সাইবার হুমকি কিংবা সীমান্ত অস্থিতিশীলতা মোকাবিলায় গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান আরও জোরদার করা হবে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, এই চুক্তির দরজা কেবল সৌদি-পাকিস্তানের জন্যই নয়, বরং চাইলে অন্য আরব দেশগুলোও এতে যুক্ত হতে পারবে। এটি আসলে সৌদি আরবকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য এক আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ফলে, এই সমঝোতা কার্যত ন্যাটো ধাঁচের প্রতিরক্ষা কাঠামোর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। যেমনভাবে ন্যাটো দেশগুলো একে অপরকে আক্রমণ থেকে রক্ষার অঙ্গীকার করে, তেমনি সৌদি-পাকিস্তান চুক্তি মুসলিম বিশ্বের মধ্যে প্রথমবারের মতো এমন সমষ্টিগত প্রতিরক্ষার নজির স্থাপন করল। সেজন্য অনেকেই একে ইসলামিক ন্যাটো নামে অভিহিত করছে।

সৌদি কি পারমাণবিক অস্ত্র পাবে?

নতুন এই প্রতিরক্ষা চুক্তির ফলে সৌদি আরব কী পাকিস্তানের পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে কিনা; সেই প্রশ্নই আন্তর্জাতিক মহলে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরবকে পারমাণবিক অস্ত্র বা পারমাণবিক সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়নি। তবে চুক্তির ভাষা ও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের বক্তব্যে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান প্রয়োজনে “যা কিছু আছে সবই ব্যবহার করা যাবে”—তবে তা দায়িত্বশীলভাবে। এই বক্তব্যকে অনেকে Nuclear Umbrella বা “পারমাণবিক ছাতা”র প্রতি ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান সরাসরি সৌদিকে পারমাণবিক সুরক্ষা দেওয়ার কথা না বললেও বিষয়টিকে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্পষ্ট রাখা হয়েছে। কারণ এতে সৌদি কৌশলগত সুবিধা পাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিগুলো বুঝে যাচ্ছে যে প্রয়োজনে পাকিস্তান সৌদির পাশে দাঁড়াতে পারে, এমনকি তার পারমাণবিক সক্ষমতাও কাজে লাগাতে পারে। অন্যদিকে পাকিস্তানও প্রকাশ্যে এই প্রতিশ্রুতি না দিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ এড়িয়ে যাচ্ছে।

সৌদি আরব অতীতে নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আগ্রহ দেখালেও বারবার জানিয়েছে, তারা অস্ত্র বানাতে চায় না, বরং শান্তিপূর্ণ জ্বালানি কাজে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান অতীতে অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছিলেন, “আমার বোমা বানানোর জন্য ইউরেনিয়াম দরকার নেই, আমি চাইলে পাকিস্তান থেকে কিনে নিতে পারব”।

সব মিলিয়ে বলা যায়, সৌদি আরব আপাতত সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্র পায়নি। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সৌদিকে এক প্রকারের “পরোক্ষ পারমাণবিক সুরক্ষা” দিয়েছে, যা তাদের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে স্পষ্ট এক সতর্কবার্তা।

ভারতের কী প্রভাব পড়বে?

সৌদি আরব ও পাকিস্তানের যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তিকে ভারত বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ভারতের সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হলো—পাকিস্তান সৌদি আরবের অর্থনৈতিক সহায়তা ব্যবহার করে উন্নত মার্কিন বা পশ্চিমা অস্ত্র সংগ্রহ করতে পারে। পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে তারা বড় অঙ্কের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে পারছিল না। কিন্তু সৌদি তহবিলের সহায়তায় পাকিস্তান যদি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা ড্রোন প্রযুক্তি কিনে নেয়, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ভারসাম্যে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে।

অন্যদিকে, গত এক দশকে ভারত মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক গভীর করেছে। সৌদি আরব ভারতের অন্যতম বড় তেল রপ্তানিকারক দেশ এবং দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও অবকাঠামোগত সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিকবার সৌদি সফর করেছেন, যা দিল্লি-রিয়াদ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদির প্রতিরক্ষা ঘনিষ্ঠতা ভারতীয় কূটনীতির জন্য এক বিশাল ধাক্কা।

ইতিহাসে বহুবার ভারত-পাকিস্তান  সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তখন প্রশ্ন উঠবে, সৌদি আরব প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াবে কি না। যদি সৌদি পাকিস্তানের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে, তাহলে এটি ভারতের জন্য এক বিরল কূটনৈতিক ও সামরিক চ্যালেঞ্জ হবে।

এছাড়া, ২৫ লক্ষ ভারতীয় শ্রমিক সৌদি আরবে কাজ করেন এবং সৌদি থেকে আসা রেমিট্যান্স ভারতের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে। ভবিষ্যতে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময়ে সৌদি আরব পাকিস্তানকে সমর্থন করলে ভারতীয় শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। অর্থাৎ, চুক্তির প্রভাব শুধু সামরিক বা কূটনৈতিক পরিসরে সীমাবদ্ধ নয়, এর অর্থনৈতিক ও মানবিক মাত্রাও ভারতের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রভাব

সৌদি পাকিস্তানের মতো একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশকে নিরাপত্তার অংশীদার করে নেয়ার ফলে, ইরান নিঃসন্দেহে আরও বেশি চাপের মুখে পড়েছে। কারণ সৌদি-আরব ইরান দীর্ঘ সময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রক্সি ওয়ার বা ছায়া যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরব বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সক্রিয় ছিল, কিন্তু গাজায় আগ্রাসন ও দোহায় হামাস নেতাদের ওপর হামলার পর থেকে সম্পর্কের টানাপোড়েন বেড়েছে। এ অবস্থায় সৌদি পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা জোট গড়ে তোলার পর, ইসরায়েল এটিকে সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখতে পারে। বিশেষ করে পাকিস্তানের পারমাণবিক শক্তির পরোক্ষ ছায়া ইসরায়েলের জন্য এক নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। ইরানের পারমানবিক স্থাপনা ধ্বংসের পর ইসরায়েল পাকিস্তানের পারমানবিক সক্ষমতা ধ্বংসের দিকেও ইঙ্গিত দিয়েছিল।


অন্যদিকে দীর্ঘদিন সৌদি নিরাপত্তা শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক ছিল। মার্কিন সামরিক ঘাঁটি, অস্ত্র বিক্রি এবং প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ সৌদির প্রধান ভরসা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি যে কেবল আমেরিকার ওপর আর নির্ভর করছে না, এই চুক্তি তারই পরিষ্কার বার্তা।

সব মিলিয়ে বলা যায়, পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি কেবল দুই দেশের জন্য নয়, বরং ভারত, ইরান, ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং সমগ্র আরব বিশ্বের জন্যও নতুন কৌশলগত বাস্তবতা তৈরি করেছে। এটি একদিকে যেমন ইসলামিক ন্যাটোর মত সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা জোটের ইঙ্গিত দেয়, অন্যদিকে আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কাও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *


দিন
ঘণ্টা
মিনিট
সেকেন্ড
আমাদের লাইভ ক্লাস শেষ হয়েছে, তবে আপনি এখন ফ্রি রেকর্ডেড কোর্সে ইনরোল করে দেখতে পারবেন।
আপনার রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আপনার জন্য একটি একাউন্ট তৈরি হয়েছে। প্রদত্ত ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

কোর্সের তারিখ: ০৩/১০/২০২৫
সময়: রাত ৯টা থেকে
(বাংলাদেশ সময়)

আপনার সঠিক - নাম, ইমেইল দিয়ে
Sign Up এ ক্লিক করুন।