পৃথিবীর অজানা এক দেশ ওয়েস্টার্কটিকা

maxresdefault (31)
জীবনযাপন

পৃথিবীর অজানা এক দেশ ওয়েস্টার্কটিকা

ওয়েস্টার্কটিকা

আমরা সবাই জানি এন্টার্কটিকা মহাদেশে কোন দেশ নেই। কিন্তু এখানেই লুকিয়ে আছে এক কাল্পনিক দেশ, যার নাম ওয়েস্টার্কটিকা। ওয়েস্টার্কটিকাকে (Westarctica) আসলে একটি স্বঘোষিত দেশ; যাকে কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে এই “মাইক্রোনেশন” বা ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটির রয়েছে নিজস্ব পতাকা, মুদ্রা, পাসপোর্ট, এমনকি একজন ‘ডিউক’ বা অভিজাত শাসক।

যে দেশে কেউ বাস করে না | ওয়েস্টার্কটিকা

ওয়েস্টার্কটিকা আসলে কোথায়?

আন্টার্কটিকার একটি বিস্তৃত বরফাচ্ছন্ন অংশের নাম Marie Byrd Land। আন্টার্কটিকার পশ্চিম দিকে থাকা এই অঞ্চলটি হল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ একটি “নো ম্যনস ল্যান্ড”। অর্থাৎ, পৃথিবীর কোনো দেশই এই অঞ্চলের মালিকানা দাবি করেনি।

২০০১ সালে ট্র্যাভিস ম্যাকহেনরি (Travis McHenry) নামের একজন সাবেক মার্কিন নৌবাহিনীর সদস্য, Marie Byrd Land অঞ্চলকে “Westarctica” নামে একটি নতুন স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা দেন। তার যুক্তি ছিল, এই অংশের উপর পৃথিবীর কেউই দাবি করেনি, তাই তিনি নিজেই সেটার দায়িত্ব নিচ্ছেন।

তিনি নিজেকে “Grand Duke of Westarctica” ঘোষণা করে একটি সরকারি কাঠামো গঠন করেন, যার মধ্যে আছে মন্ত্রীসভা, আইনসভা এবং নাগরিকত্বের মত রাষ্ট্রের মৌলিক উপাদান সমূহ।

ওয়েস্টার্কটিকার আয়তন প্রায় ২৬ লাখ বর্গকিলোমিটার। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, দেশটি বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ১৭ গুণ বড়। এমনকি ওয়েস্টার্কটিকা প্রায় ভারতের সমান এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের দ্বিগুণেরও বড়

ওয়েস্টার্কটিকা দাবি করে তাদের প্রায় ২ হাজারের বেশি নাগরিক রয়েছে। কিন্তু এসব নাগরিদের কেউই ওয়েস্টার্কটিকায় বসাবাস করে না। তারা সবাই বিভিন্ন দেশে থাকেন এবং শুধু অনলাইনে একে অপরের সাথে যুক্ত। তবে চাইলেও বাস্তবে ওয়েস্টার্কটিকাতে কেউ বসবাস করতেও পারবে না। কারণ এন্টার্কটিকা মহাদেশের যে এলাকাটি নিয়ে ওয়েস্টার্কটিকা গঠিত, সেটি  সম্পূর্ণ বরফাচ্ছন্ন এলাকা। এখানকার তীব্র ঠাণ্ডার কারণে এলাকাটি মানব বসতির অযোগ্য অঞ্চল।

ওয়েস্টার্কটিকার উদ্দেশ্য কী?

প্রথম দিকে ওয়েস্টার্কটিকা ছিল এক ধরনের স্যাটায়ার বা রসিকতা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এটি একটি পরিবেশবান্ধব ও জলবায়ু সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক সংগঠনে রূপ নেয়। বর্তমানে তারা আন্টার্কটিকা সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা তৈরির কাজ করে থাকে।

এখনও পর্যন্ত কোনো রাষ্ট্র বা জাতিসংঘ ওয়েস্টার্কটিকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। অতীতে একাধিক দেশ এন্টার্কটিকার মালিকানা দাবি করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে Antarctic Treaty নামে একটি চুক্তির মাধ্যমে সবাই সম্মত হয় যে, আন্টার্কটিকা একটি বৈশ্বিক বিজ্ঞান গবেষণার অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হবে। এবং কোন দেশ এই অঞ্চলের মালিকানা দাবি করতে পারবে না। সেই হিসেবে ওয়েস্টার্কটিকার রাস্ট্রের অস্তিত্ব সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

তবে সংজ্ঞা মতে একটি দেশের যা যা থাকা দরকার, ওয়েস্টার্কটিকার তার সবই আছে। এমনকি Ice Mark নামে ওয়েস্টার্কটিকার নিজস্ব মুদ্রাও আছে। তারা অর্থের বিনিময়ে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষকে নাগরিকত্ব এবং “শিরোপা” প্রদান করে থাকে।

যেহেতু ওয়েস্টার্কটিকা দেশ হিসেবেই একটি তামাশা, তাই জাতিসংঘের সাথে তাদের কোন সম্পর্কই থাকার কথা নয়। কিন্তু মজার বিষয় হল, ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি Westarctica জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। তবে সেই স্বীকৃতি কোন দেশ হিসেবে নয়, বরং একটি এনজিও হিসেবে। এর মাধ্যমে তারা পরিবেশ আন্দোলনমূলক এনজিও হিসেবেও  আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কাজ করার বৈধতা অর্জন করেছে।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *


দিন
ঘণ্টা
মিনিট
সেকেন্ড
আমাদের লাইভ ক্লাস শেষ হয়েছে, তবে আপনি এখন ফ্রি রেকর্ডেড কোর্সে ইনরোল করে দেখতে পারবেন।
আপনার রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আপনার জন্য একটি একাউন্ট তৈরি হয়েছে। প্রদত্ত ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

কোর্সের তারিখ: ০৩/১০/২০২৫
সময়: রাত ৯টা থেকে
(বাংলাদেশ সময়)

আপনার সঠিক - নাম, ইমেইল দিয়ে
Sign Up এ ক্লিক করুন।