আদানির সাথে হাসিনার গোপন চুক্তি

maxresdefault (30)
বাংলাদেশ

আদানির সাথে হাসিনার গোপন চুক্তি

ভারতের আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার বিষয়ে শেখ হাসিনার যে চুক্তিটি হয়েছিল, সেই চুক্তির শর্তগুলো ছিল সম্পূর্ণ গোপনীয়। বাংলাদেশের চাহিদা মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকার পরও, ঠিক কি কারণে শেখ হাসিনা ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করার এই গোপন চুক্তিটি করেছিল তা কারো কাছেই বোধগম্য নয়।

হাসিনার সাথে করা আদানির সেই গোপন চুক্তি ছিল কর্পোরেট জালিয়াতির সর্বোচ্চ উদাহরণ। চুক্তির শর্তগুলো সবার সামনে আসলে, দেশে এই বিষয়টি নিয়ে মারাত্মক অসন্তোষ তৈরি হতে পারতো, সে কারণেই আওয়ামী লীগ সরকার আদানির সাথে করা চুক্তির শর্তগুলো গোপন করেছিল। সেই গোপন চুক্তির খেসারত দিতে হচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। আদানি পাওয়ার বাংলাদেশের কাছে তাদের ৮০০ মিলিয়ন ডলার বা ৯ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা পরিশোধ করার জন্য, প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর কাছে চিঠি লিখে তাগাদা দিয়েছে।

আদানির সাথে বিদ্যুৎ চুক্তি কতটা ক্ষতিকর ?

গোপন চুক্তি

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসেন। তখন নরেন্দ্র মোদি ভারতের কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে ব্যবসা করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে বলেছিল। সেই সফরেই মোদি সরকারের সাথে হাসিনা সরকার ভারতের বিদ্যুৎ কেনার জন্য ৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করে।

এরপর ২০১৭ সালে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের আদানি পাওয়ার লিমিটেড, ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে একটি গোপন চুক্তি সই করে। চুক্তিটি গোড্ডা বিদ্যুৎ প্রকল্প হিসেবে পরিচিত। এই চুক্তি অনুযায়ী ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডা জেলায় ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। সেখান থেকে ২৫ বছর বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। এর বাইরে চুক্তির আর কোন শর্ত গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়নি।

আদানির বিদ্যুৎ নিয়ে ভারত বাংলাদেশের সরকারী কর্তৃপক্ষও কখনও খোলামেলা আলোচনা করেনি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বলেছে, আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি একটি সার্বভৌম সরকারের সঙ্গে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের। এর সঙ্গে ভারত সরকারের কোন সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহি ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে বলেছে, আদানির সাথে বাংলাদেশের চুক্তিটি গোপনীয়।

চূক্তির শর্ত উৎঘাটন

গোড্ডা বিদ্যুৎ প্রকল্প চুক্তিটির গোপনীয়তার কারণে, ভারত-বাংলাদেশ কোন দেশের গণমাধ্যমেই এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হয়নি। তবে মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট, হাসিনা এবং আদানির সেই গোপন চুক্তির ১৬৩ পৃষ্ঠার অতি গোপন নথি সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। এরপর ওয়াশিংটন পোস্ট ৩ জন জ্বালানী বিশেষজ্ঞকে দিয়ে চুক্তিটি পর্যালোচনা করিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে।

ওয়াশিংটন পোস্টের সেই রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে যাওয়ার পর থেকে, আদানি পাওয়ার কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও, বাংলাদেশকে প্রতিবছর ৪০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। আদানি গ্রুপ এত বিপুল পরিমাণ অর্থ ক্যাপাসিটি চার্জ বাবাদ বাংলাদেশের কাছ থেকে আদায় করবে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক জ্বালানি বিশ্লেষক টিম বাকলি চুক্তিটি পর্যালোচনা করে জানিয়েছেন,  বিদ্যুৎ খাতের বৈশ্বিক মান অনুযাযী আদানি গ্রুপের ক্যাপাসিটি চার্য অনেক বেশি। তিনি আরো জানান, বাংলাদেশে পাইকারি বিদ্যুতের যে বাজার মূল্য, তার চেয়েও পাঁচগুণ বেশি দামে আদানির কাছে থেকে বিদ্যুৎ কিনবে বাংলাদেশ। অথচ এই চুক্তি দেখিয়েই আওয়ামীলীগ সরকার দাবি করেছিল, আদানির সাথে চুক্তি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত লাভজনক।

কয়লার দাম

গোডার বিদ্যুৎ প্রকল্পটি যেহেতু একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র; তাই আদানি গ্রপের সাথে চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, কয়লার দাম নির্ধারণ। বাংলাদেশ সরকার, দেশের কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার ক্ষেত্রে কয়লা জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে। আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম বেড়ে গেলেও, সরকার নির্দিষ্ট অর্থের বেশি টাকা প্রদান করে না। কিন্তু আদানির সাথে চুক্তির ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লার দাম আন্তর্জাতিক বাজার দর অনুযায়ী পরিশোধ করার চুক্তি করে।

যদিও রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু শুরু হওয়ার পর থেকে কয়লার দাম প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে। তারপরও কয়লা সরবরাহে খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না, কারণ ভারতের ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ড এবং ওড়িষ্যা রাজ্যে আদানি গ্রুপের বিশাল বিশাল কয়লা খনি আছে। এমনকি ভারতে কয়লা উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া ৬টি খনির মধ্যে ৪টি খনির ঠিকাদারিই পেয়েছে আদানির কম্পানি। শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে থাকা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কয়লাখনিও আদানি গ্রুপের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। আদানি গ্রুপের ওয়েবসাইট বলা হয়েছে, তারা বছরে নয় কোটি টন কয়লা উৎপাদন করতে পারে এবং আগামী ৩০ বছরে তারা ৩০০ কোটি টন কয়লা মজুদ করার সক্ষমতা রাখে।

গ্লোবাল এনার্জি মনিটরের তথ্যমতে, গৌতম আদানির কম্পানি বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং কয়লা খনির মালিক। ভারতে এত কয়লার মালিকানা থাকার পরও, আদানি পাওয়ার চুক্তিতে দেখিয়েছে যে, তারা প্রতি বছর ৭০ লক্ষ টন কয়লা বিদেশ থেকে আমদানি করবে। এত বিপুল পরিমাণ কয়লা বিদেশ থেকে আমদানি করলে স্বভাবতই তার দাম বেশি পড়বে। কিন্তু সেখানেও আদানি গ্রুপই লাভবান হবে। কারণ অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা বিদেশী কয়লার মালিকানাও আদানির। সেই বিদেশী কয়লা আবার যে বন্দরে খালাস করা হবে, সেই সমুদ্র বন্দরও আদানির মালিকানাধীন। এখানেই শেষ নয়, বন্দর থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত কয়লা পরিবহণ করার জন্য যে রেললাইন ব্যবহার করা হবে, সেই রেললাইনও আদানিরই তৈরী করা।

কয়লার প্রতিটি ধাঁপে আদানির প্রত্যক্ষ ব্যবসা থাকলেও, কয়লার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দাম ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, আদানি গ্রুপ প্রতি টন কয়লার দাম ধরেছে ৪০০ ডলার। অথচ বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে করা পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার দাম পড়ছে প্রতি টন ২৫০ ডলারের মতো। আদানি প্রতি টন কয়লার যে দাম প্রস্তাব করেছে, তা রামপাল ও পায়রার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি।

আদনির কয়লার দাম বেশি হবার কারণে, বাংলাদেশে উৎপাদন করলে যে ‍বিদ্যুতের দাম হত ১৩-১৪ টাকা, আদানির কাছ থেকে তা ২২ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আদানির বিদ্যুতের দাম বেশি হবার অযুহাতে বাংলাদেশ যদি আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ না কেনে, সেক্ষেত্রেও প্রতিবছর আদানিকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে। বাংলাদেশী টাকায় যার মূল্য ৪ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। তারমানে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা বাদ দিলেও ২০৪৫ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা আদানিকে দিয়ে যেতে হবে। ডলারের দাম বাড়লে এই টাকা আরো বাড়বে। আগামী ২৫ বছর আদানিকে ক্যাপাসিটি চার্জ দিলে তার পরিমান দাঁড়াবে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকারও অনেক বেশি। কয়লার দাম রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের আগের পর্যায়ে ফিরে গেলেও, অভ্যন্তরীণ কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সরকারের যে পরিমাণ খরচ হয়, তারচেয়ে অন্তত ৩৩ শতাংশ বেশি দামে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে হবে। জ্বালানী বিশেষজ্ঞরা ওয়াশিংটন পোষ্টকে বলেছিল, বাংলাদেশের সাথে করা আদানির এই চুক্তিটি অবশ্যই প্রতারণা। আর বাংলাদেশের পক্ষে এই চুক্তির বৈধতা দিয়ে দেশের জনগণের সাথে চূড়ান্ত পর্যায়ের বিশ্বাসঘাতকতার কাজটি করেছে, শেখ হাসিনার জ্বালানী বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী। আদানীর কাছ থেকে অধিক দামে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে, দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হলেও, শেখ হাসিনার মাফিয়া সরকারের লোকজন ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছে।

আদানির প্রতারণা

আদানির গোড্ডা প্রকল্পে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ১০৫ কিলোমিটার দীর্ঘ আদানি হাই ভোল্টেজ লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সীমান্ত পর্যন্ত আসে। ভারতের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিবহণের খরচও বহন করে বাংলাদেশ। তারপর সীমান্ত থেকে আরো ২৯ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পরিবহণ করে বাংলাদেশের জাতীয় গ্রীডের সাথে সংযুক্ত করা হয়। ২০২২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ভারতের ঝাড়খণ্ডের আদানি পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আসা শুরু হবার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের প্রায় ছয় মাস পরে, নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অনেক কম বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। ২০২৩ সালে আওয়ামীলীগ সরকারের তথ্য অনুযায়ী, কয়লা ও গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে, দেশের সর্বোচ্চ চাহিদার তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ছিল বাংলাদেশের। সেক্ষেত্রে ওই সময়ে আদানির বিদ্যুৎ বাংলাদেশের প্রয়োজনই হবার কথা ছিল না।

আদানির সাথে চুক্তির আরেকটি হতাশাজনক বিষয় হল, চুক্তির অর্থ মার্কিন ডলারে পরিশোধ করতে হবে। যখন চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছিল, তখন ১ মার্কিন ডলারের মূল্য ছিল ৮১ টাকা, আর বর্তমানে ডলারের দাম প্রায় ১২০ টাকা।

গোড্ডা বিদ্যুৎ প্রকল্প চুক্তির শর্তগুলো, শুধু বাংলাদেশের জনগণের কাছে গোপন করেই প্রতারণা করা হয়নি। ধূর্ত আদানি গ্রুপ চুক্তির বেশ কিছু বিষয় বাংলাদেশ সরকারের কাছেও গোপন করেছে। নরেন্দ্র মোদির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে, গৌতম আদানি ২০১৯ সালে, গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমিকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করিয়ে নেয়। এর ফলে আদনি পাওয়ার ভারতে সব ধরনের শুল্ক-কর ছাড় পেয়ে যায়। চুক্তি অনুযায়ী, কর মওকুফের বিষয়টি ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশকে জানানোর কথা ছিল। কারণ শুল্ক-কর ছাড়ের কারণে ক্যাপাসিটি চার্জ ও কয়লা আমদানি ব্যয় কমে যাবে। কিন্তু আদানি পাওয়ার বিষয়টি গোপন করে গেছে। সব মিলিয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানি গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের করা বিদ্যুৎ চুক্তিটি বৈষম্য ও প্রতারণামূলক।

আদানির বকেয়া

শেখ হাসিনার আমলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গিয়ে বাংলাদেশ চরম আর্থিক সংকটে পড়েছিল। সেকারণেই হয়ত, দীর্ঘদিন আদানির বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধ করা থেকে বিরত ছিল হাসিনা সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশের তীব্র বিদ্যুৎ সংকটের মধ্যে, আদানি পাওয়ার এর মোটা অঙ্কের দেনা পরিশোধ করার বিষয়টি, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বাড়তি মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনা শুধু আদানির কাছ থেকেই নয়, ভারতের বেশ কয়েকটি সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার কাছ থেকেও বিদ্যুদ আমদানি করেছে। সবমিলিয়ে ভারতের কাছে বাংলাদেশের বকেয়ার পরিমাণ ১০০ কোটি ডলার বা ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য ১১ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু আদানির কাছেই বকেয়া আছে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বা ৯ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। আদানি পাওয়ার ইতোমধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর কাছে চিঠি লিখে এই টাকা পরিশোধ করার তাগাদা দিয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের একটি অংশ এখনই পরিশোধ না করলে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সঙ্কট আরো তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ ইতোমধ্যেই আদানি অন্তত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

শেখ হাসিনার মাফিয়া অর্থনীতির ভঙ্গুর অর্থনীতির কারণে, এত মোটা অংকের দায় মেটানো অনেকটাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই এই মুহূর্তে সঙ্কট সমাধানের জন্য বিশ্বব্যাংক ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

ভারতের আদানি গ্রুপ বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত একটি প্রতারক প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালে মার্কিন অর্থনৈতিক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের কর্পোরেট জালিয়াতি প্রকাশ করার পর, আদানি রাতারাতি ১০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ হারিয়েছিল। অতীতে কয়লা খনি কেলেঙ্কারির কারণে অস্ট্রেলিয়ার জনগণ আদানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে, সাম্প্রতিক সময়ে কেনিয়ায়ও বিমানবন্দর কেলেঙ্কারিতে আদানি গ্রুপ নিন্দিত হয়েছে। সেই আদানির সাথে হাসিনা সরকার, বাংলাদেশের টাকা দিয়ে ভারতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে, বাংলাদেশের চেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ আমদানি করার চুক্তি করেছিল। বাংলাদেশের জনগণের সাথে করা এমন প্রতারণামূলক চুক্তি সই করা, প্রকৃতপক্ষে দেশ বিক্রি করে দেওয়ারই নামান্তর।

আমাদের ভিডিওগুলো ফেসবুকে দেখতে চাইলে কিকেনকিভাবে র ফেসবুক পেজ লাইক এবং ফলো করুন। পরবর্তী ভিডিও আপলোড হওয়ার সাথে সাথে দেখতে চাইলে, কিকেনকিভাবে সাবস্ক্রাইব করে বেল আইকনটিতে ক্লিক করুন।

তথ্যসূত্র:

১. ওয়াশিংটন পোস্ট: https://www.washingtonpost.com/world/2022/12/09/india-coal-gautam-adani-godda/

২. ডেইলি স্টার: https://bangla.thedailystar.net/environment/natural-resources/electricity-fuel/news-429686

৩. বিবিসি বাংলা: https://www.bbc.com/bengali/articles/cd122xpxn8jo

৪. প্রথম আলো: https://www.prothomalo.com/bangladesh/ayxp6mvb5w

৫. মানবজমিন: https://mzamin.com/news.php?news=42010

৬. সময় টিভি: https://www.somoynews.tv/news/2024-09-11/YCXxJIXC

আদানির সাথে বিদ্যুৎ চুক্তি কতটা ক্ষতিকর?” শিরোনামে কিকেনকিভাবে একটি ভিডিও ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতেও প্রকাশ করেছিল। তখন বাকস্বাধীনতা ছিল না, তারপরও আমরা সাধ্যমত হাসিনা সরকারের দুর্নীতি প্রকাশ করার চেষ্টা করে গেছি।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *


দিন
ঘণ্টা
মিনিট
সেকেন্ড
আমাদের লাইভ ক্লাস শেষ হয়েছে, তবে আপনি এখন ফ্রি রেকর্ডেড কোর্সে ইনরোল করে দেখতে পারবেন।
আপনার রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আপনার জন্য একটি একাউন্ট তৈরি হয়েছে। প্রদত্ত ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

কোর্সের তারিখ: ০৩/১০/২০২৫
সময়: রাত ৯টা থেকে
(বাংলাদেশ সময়)

আপনার সঠিক - নাম, ইমেইল দিয়ে
Sign Up এ ক্লিক করুন।