মার্কিন ইরান আক্রমণ
মার্কিন ইরান আক্রমণ
ট্রাম্পের ইরান আক্রমণ
ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন এক কাজ করেছেন, যা এর আগে কখনোই আমেরিকা করেনি। অতীতে ইরানের সাথে বহু খারাপ সময় পার করলেও, যুক্তরাষ্ট্র কখনও সরাসরি ইরানে হামলা করেনি।
ট্রাম্প ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আঘাত করেছে। নাতাঞ্জ, ইস্পাহান এবং ফোর্দো পারমানবিক কেন্দ্রে। ফোর্দোতে অবস্থিত পারমানবিক কেন্দ্রটি মাটির এতটাই গভীরে ছিল যে, তা ধ্বংস করার মত সক্ষমতা ইসরায়েলের নেই।
শুধুমাত্র আমেরিকার তৈরী ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা GBU-57 দিয়ে এই কাজটি করা যায়। এই ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বোমাটি তৈরি হয়েছে প্রায় ২০০ ফুট গভীর মাটির নিচে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য। তাই ইসরায়েল দীর্ঘদিন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে এখানে বোমা ফেলার অনুরোধ করে আসছিল।
তবে ফর্দো পারমানবিক কেন্দ্রের কিছু অংশ মাটির ৩০০ ফুট গভীর রয়েছে। তাই মার্কিন হামলায় বাস্তবে কী ঘটেছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ইরান ইতিমধ্যেই দাবি করেছে যে, তারা ফর্দো থেকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলেছিল। ফলে এই হামলার তাদের তেমন ক্ষতি হয়নি।
‘শান্তির জন্য’ হামলা?
ইরানে হামলা চালানোর পর জনসমক্ষে এসে ট্রাম্প নিজেই এই হামলার কথা স্বীকার করেছেন। এবং হামলার পর ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নাকি শান্তির জন্য হামলা করেছেন। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) এখনো পর্যন্ত ইরানে হামলা হওয়া এই তিনটি স্থানের কোথাও, তেজস্ক্রিয়তা বা বিকিরণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার রিপোর্ট দেয়নি। তারমানে যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের পারমানবিক কেন্দ্রে হামলা করেও থাকে, তাহলে সেই পরামানবিক পদার্থগুলো মাটির নিচেই চাপা পড়ে আছে। অথবা মার্কিন হামলা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তবে এই বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়, বিশ্লেষকদের গবেষণার পর এটি ভবিষ্যতেই জানা যাবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভাবমূর্তিতে এই আক্রমণ অনেক বড় প্রভাব ফেলেছে। এতদিন তিনি নিজেকে এমন একজন নেতা হিসেবে তুলে ধরতেন যিনি অযথা যুদ্ধে জড়াতে চান না। অতীতে ট্রাম্প ওবামােক বলছেন যে, ওবামা একজন দুর্বল নেতা, সে আলোচনায় খুব বেশি পারদর্শী নয়, বলেই বারাবর যুদ্ধে জড়িয়েছে। কিন্তু এখন সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পের সেসব কথা দিয়েই, ট্রাম্পকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করা হচ্ছে।
ইরানের অবস্থান
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর নেতানিয়াহু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
ইরানের কাছে যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, তার অনেকটাই এখনও অক্ষত আছে। কারণ ইরান এগুলোকে সমগ্র দেশজুড়ে ছড়িয়ে রেখেছে। এবং যুক্তরাষ্ট্র চাইলেও ইরানে ক্ষেপনাস্ত্র ভান্ডার সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে পারবে না।
পশ্চিমা শক্তিগুলোও জানে না, ইরানের হাতে ঠিক কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র মজুত রয়েছে।
ইসরায়েলও পুরোপুরি বুঝতে পারেনি ইরানের আসল সামরিক শক্তি কতখানি। ইরানের কাছে ‘খোররাম শাহ’ নামের এক ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর পাল্লা প্রায় ২০০০ কিলোমিটার এবং প্রায় ১৮০০ কেজি পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে পারে।