বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে কী সুবিধা আছে
বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে কী সুবিধা আছে
তৃতীয় টার্মিনাল
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল আংশিক উদ্বোধন করা হয়েছে। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা। আর বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৮০ লাখ যাত্রী দেশের প্রধান বিমান বন্দরটি ব্যবহার করে। নতুন এই টার্মিনালের মাধ্যমে বছরে অতিরিক্ত ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। সেই সাথে যাত্রীসেবায় যুক্ত হবে বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বমানের এই টার্মিনাল, বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে নতুন সম্ভবনার দ্বার উন্মোচন করবে। তবে এই বিমান বন্দরে মাত্র একটি রানওয়ে থাকার কারণে সামগ্রিক অর্থে তৃতীয় টার্মিনাল খুব একটা অর্থবহ নাও হতে পারে।
নির্মাণ প্রকল্প
বিমানবন্দর একটি দেশের প্রবেশদ্বার। সে হিসেবে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে বরাবরই ব্যার্থ হচ্ছিল। অনুন্নত অবকাঠামো এবং নিম্নমানের যাত্রী সেবার কারণে দেশী-বিদেশী যাত্রীদের কাছে ঢাকার বিমান বন্দর এক আতঙ্কের নাম।
কারিগরি এবং যাত্রীসেবার অসুবিধা দূর করতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করা হয়। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বা বেবিচক বলছে, তৃতীয় টার্মিনালের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজই শেষ হয়েছে। আগামী বছরের শেষের দিকে টার্মিনালের পুরো কার্যক্রম চালু করা যাবে।
তৃতীয় টার্মিনালের নকশা করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্ট, ভারতের গুজরাটের সর্দার বল্লভভাই পাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পাকিস্তানের ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, ব্রুনেই, মিয়ানমার, ভিয়েতনামসহ বিশ্বের আরো বেশ কিছু দেশের বিমানবন্দরের নকশা করেছেন। তিনটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা করপোরেশন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফাও নির্মান করেছিল স্যামসাং এর এই কন্সট্রাকশন কম্পানি। অথচ এত বড় প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও এয়ারপোর্টের থার্ড টার্মিনাল নির্মানের সময়, শ্রমিকদের ঠিকমত বেতন না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে স্যামসাং এর বিরুদ্ধে।
যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে যাত্রীদের জন্য বিশ্বমানের সকল সুযোগ-সুবিধা থাকবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমান টার্মিনাল দুটির ব্যবস্থাপনা অনেকগুলো সনাতন পদ্ধতিতে চলে; কিন্তু তৃতীয় টার্মিনাল হবে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়। নতুন টার্মিনাল ভবনে পাশাপাশি ১৭৭টি চেকইন কাউন্টার থাকবে। ৬৪টি আগমনী ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ৬৪টি বহির্গমন ইমিগ্রেশন ডেস্ক এবং বহির্গমন পথে ১০টি স্বয়ংক্রিয় ই-গেট থাকবে। সেই সাথে যেসব যাত্রী অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে আসবেন, তাঁদের জন্য পাঁচটি ই-গেট থাকবে। যাত্রীদের তল্লাশির জন্য থাকবে স্বয়ংক্রিয় বডি স্ক্যানার যন্ত্র। তৃতীয় টার্মিনালে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে এবং অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি পৃথক বেল্ট থাকবে। সেই সাথে একটি করিডরের মাধ্যমে পুরোনো দুটি টার্মিনালের সঙ্গেও নতুন টার্মিনালকে যুক্ত করা হবে। তৃতীয় টার্মিনালে সময় কাটানোর জন্য মুভি লাউঞ্জ, ফুডকোর্ট, এয়ারলাইনস লাউঞ্জ, ডে-রুম সহ ১৪টি ডিউটি ফ্রি শপ থাকবে। এছাড়া যাত্রীদের নিতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, বাচ্চাদের খেলার জায়গা থাকছে।
বিশ্বমানের এই টার্মিনালে ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি রাখার সক্ষমতাসহ বহুতল গাড়ি পার্কিং তৈরি করা হচ্ছে। ঢাকায় বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হলে যানজটের ভয়ে হাতে অনেক লম্বা সময় নিয়ে রওনা দিতে হয়। কিন্তু মেট্রোরেল এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেস এ কাজ সম্পন্ন হলে, ঢাকার যেকোন প্রান্ত থেকে খুব দ্রুত বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে পৌছানো যাবে।
বিমানের সুযোগ-সুবিধা
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টার্মিনালের পুরো কার্যক্রম চালু হতে কিছু সময় লাগলেও, এর অনেক সুবিধা এখন থেকে ব্যবহার করা যাবে। এয়াপোর্টের যে জায়গায় বিমান পার্ক করে রাখা হয়, তাকে এপ্রোন বা টারম্যাক বলা হয়। তৃতীয় টার্মিনালের অ্যাপ্রনে একসাথে ৩৭টি এয়ারক্রাফট পার্ক করা যাবে। টারম্যাক থেকে রানওয়েতে যাওয়ার জন্য যে রাস্তা ব্যবহার করা হয় তাকে বলা হয় ট্যাক্সিওয়ে। তৃতীয় টার্মিনাল থেকে রানওয়েতে যাওয়ার জন্য দুটি হাই-স্পিড ট্যাক্সিওয়ে তৈরি করা হয়েছে। সেই সাথে একটি অত্যন্ত অত্যাধুনিক এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এরফলে উড়োজাহাজ অবতরণের পর খুব দ্রুত এপ্রোনের দিকে যেতে পারবে এবং পরবর্তী উড়োজাহাজকে রানওয়ে ব্যবহারের জন্য কম সময় অপেক্ষা করতে হবে। যাত্রীরা যাতে দ্রুত বিমানে উঠতে পারে সেজন্য বোর্ডিং ব্রিজের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।
তৃতীয় টার্মিনারের আমদানি ও রপ্তানি কার্গো টার্মিনালের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী মার্চ–এপ্রিলে কার্গো টার্মিনাল চালু হতে পারে। থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড ও কার্গো হ্যান্ডলিং উভয় সেবা পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব জাপানকে দেওয়া হবে। সেকারণে যাত্রীরা আরো উন্নত সেবা পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে জায়গার স্বল্পতার কারণে নতুন কোন বিমান সংস্থাকে ঢাকা থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করার সুযোগ দেওয়া যাচ্ছিল না। তৃতীয় টার্মিনালের কাজ শেষ হওয়ার আগে থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন বিমান সংস্থা বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশের আগ্রহ দেখিয়েছে। ইতিমধ্যে ১২টি বিদেশি এয়ারলাইনস তৃতীয় টার্মিনাল থেকে বিমান সেবা পরিচালনার জন্য আবেদন জমা দিয়েছে। সেই সাথে এমিরেটস এবং কুয়েত এয়ারওয়েজ তাদের ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়াতে চাচ্ছে।
রানওয়ে সঙ্কট
বিমান বন্দরের উন্নয়ন মূলত দুই রকমের। একটি হল যাত্রী সেবা নিশ্চিত করা এবং আরেকটি হল বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণে উন্নতি করা। পরিকল্পিতভাবে টার্মিনাল-৩ নির্মাণ করায় যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি নিশ্চিত হবে। কিন্তু বিমান ওঠা নামার ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি এখনও রয়ে গেছে। বাংলাদেশকে একটি এভিয়েশন হাব হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করা হয়েছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এভিয়েশন হাব তো দূরের কথা, এই বিমান বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করাই হয়ত কঠিন হয়ে যাবে।
বর্তমানে ৩৩টি এয়ারলাইন্স প্রতিদিন বিমানবন্দর থেকে ১৫০টি ফ্লাইট পরিচালনা করে। কিন্তু এতগুলো ফ্লাইটের জন্য বিমানবন্দরে রানেওয়ে আছে মাত্র একটি। সেকারণে একসঙ্গে দুটি প্লেন টেকঅফ এবং ল্যান্ডিং করতে পারে না। একসঙ্গে যদি দুই-তিনটি এয়ারক্রাফট আসে তাহলে তাদের অপেক্ষা করতে হয়। ঢাকা এই অঞ্চলের অত্যন্ত ব্যস্ততম একটি এয়ারপোর্ট। পিক আওয়ারে যখন একাধিক ডমিস্টিক ও ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট ওঠানামা করতে চায়, তখন প্লেনগুলোকে রানওয়েতে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। রানেওয়ে সবসময় ব্যস্ত থাকার কারণে, অনেক প্লেন ঢাকার আকাশে ঢুকে পরার পরও ল্যান্ডিং এর ক্লিয়ারেন্স পায় না। সেকারণে বিমান উড্ডয়নের সময়, অথবা বিমান অবতরণ করার পরও যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ রানওয়েতে অপেক্ষা করতে হয়। এই দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে ফ্লাইটের সময়সূচি ঠিক রাখা কঠিন হয়ে যায়। তাছাড়া এ ধরনের অনাকাঙ্খিত বিলম্বের কারণে বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলোরও মোটা অংকের টাকা অপচয় হয়।
শাহাজালাল বিমানবন্দরের এই ধরনের অসুবিধা দূর করার জন্য নতুন একটি স্বাধীন রানওয়ে অনেক আগে থেকেই দরকার ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার উদ্যোগ নিয়েছিল। এরপর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আবারও দ্বিতীয় রানওয়ে করার উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু রানওয়ে তৈরির সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুসারে, উড়োজাহাজ নিরাপদে ওঠানামা করতে হলে দুটি রানওয়ের মধ্যে কমপক্ষে ৭৫০ ফুট দূরত্ব থাকতে হবে। এছাড়া ইন্সট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম ব্যবহার করে প্লেন উড্ডয়ন বা অবতরণ করার জন্য দুটি রানওয়ের মাঝে কমপক্ষে ১ হাজার ৩৫ মিটার দূরত্ব থাকা উচিত। কিন্তু শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যে জায়গা রয়েছে, তাতে এই দূরত্ব মেনে স্বাধীনভাবে দুটি রানওয়ে বানানো সম্ভব নয়।
দ্বিতীয় রানওয়ে
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় রানওয়ে নিয়ে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করেছে। আগামী বছরের মে মাসে তৃতীয় টার্মিনালের কাজ শেষ হলে দ্বিতীয় রানওয়ের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বেশি জায়গা না থাকায় রানওয়ে দুটি একে অপরের খুব কাছাকাছি হবে এবং দুটি ফ্লাইট একইসঙ্গে অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারবে না। বেবিচক জানায়, নতুন রানওয়ের সুবিধা হলো যখন একটি উড়োজাহাজ অবতরণ করবে, তখন অন্যটি দেরি না করে উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত হতে পারবে। এছাড়া জরুরি কারণে একটি রানওয়ে বন্ধ থাকলে, অন্যটি ব্যবহার করা যাবে। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলেন, দ্বিতীয় রানওয়ে হলে কিছুটা সময় বাঁচবে। এখন যেমন একটা উড়োজাহাজ রানওয়ে থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত অন্যটি রানওয়েতে আসতে বা যেতে পারছে না। সেই সময়টা কমে আসবে।
তবে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দুটি রানওয়ে শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য যথেষ্ট নয়। এই বিমানবন্দরের যাত্রীর চাপ অনুযায়ী কমপক্ষে তিন থেকে চারটি রানওয়ে হলে, স্বাভিাবিক বিমান সেবা পরিচালনা সম্ভব। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ বিমানের সাবেক পরিচালক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, তৃতীয় টার্মিনাল খুব একটা অর্থবহ মনে হচ্ছে না। আগামী ১০-১৫ বছরে এই এয়ারপোর্টের যে অবস্থা দাঁড়াবে তা সামাল দেয়ার ক্ষমতা এই এয়ারপোর্টের থাকবে না। তিনি আরো বলেন, আমাদের উচিত নতুন জায়গায় নতুন একটা আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট তৈরি করা। এটা খুব জরুরি ভিত্তিতে দরকার। কারণ একটা বিমানবন্দর গড়ে তুলতে ন্যূনতম ১০-১২ বছর সময় লাগবে। পৃথিবীর সব জায়গায় বিমানবন্দরগুলো শহরের বাইরে করা হয়। বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে আলাদা শহর গড়ে তোলা হয়। সেই শহরে কার্গো, ক্যাটারিং, ক্রুদের জন্য হোটেল, কনভেনশন সেন্টার সবকিছুর সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়।
কাজ সম্পূর্ণ শেষ না করেই উদ্বোধনের সংস্কৃতি তৈরী হয়েছে। মেট্রো রেল, পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্রপ্রেসওয়ে, থার্ড টার্মিনাল
এমিরেটস এয়ারলাইন
বিমান বাংলাদেশ এবং এমিরেটস এয়ারলাইন এর মধ্যে দুটি বিষয়ে মিল রয়েছে। বাংলাদেশ এবং দুবাই উভয়েই ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে স্বাধীনতা লাভ করেছে। এবং বিমান বাংলাদেশ এবং এমিরেটস এয়ারলাইন উভয়েই ভাড়া করা বিমান দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে। কিন্তু সাফল্যের দিকে থেকে এই দুটি প্রতিষ্ঠানের পার্থক্য আকাশ পাতাল। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের কাছ থেকে একটি বিমান নিয়ে এয়ার বাংলাদেশ তার যাত্রা শুরু করেছিল; পরবর্তীতে যার নাম হয় বিমান বাংলাদেশ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই প্রথম বিমানটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের সময়ই বিধ্বস্ত হয়; পরবর্তীতে ভারত থেকে আরো দুটি বিমান আনা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান ২১টি এয়ারক্রাফটের সাহায্যে ৩০ টি গন্তব্যে যাত্রা করছে। ঠিক একই রকমভাবে দুবাই এর এমিরেটস এয়ারলাইন যাত্রা শুরু করার সময় পাকিস্তানের কাছ থেকে দুটি বিমান ভাড়া নিয়েছিল। আর বর্তমানে এমিরেটস তাদের ২৬২ টি সর্বাধুনিক বিমান দিয়ে, বিশ্বের ১৫২ টি গন্তব্যে যাত্রীসেবা প্রদান করছে। অনেকেই হয়ত ভাবতে পারেন, দুবাই হয়ত তাদের তেলের টাকা দিয়ে বিমান ব্যবসা বাড়িয়েছে। কিন্তু বিষয়টি মোটেও সেরকম নয়।