ট্রাম্প কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হল

maxresdefault (45)
কি কেন কিভাবে

ট্রাম্প কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হল

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে বিশ্ব রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত একনাম ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসল পরিচয় তিনি একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। তবে ২০১৬ সালে প্রথমবার এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয়বারের তিনি মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বপ্রথম প্রেসিডেন্ট; যার অতীতে রাজনীতির সাথে কোন সম্পৃক্ততাই ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের কোন ধরনের সরকারি প্রশাসন পরিচালনার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই তিনি সরাসরি হোয়াইট হাউজে আসীন হয়েছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পই মার্কিন ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট যাকে দুই বার অভিশংসন করা হয়েছে। এবং তিনিই একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট যার নামে ফৌজদারি মামলা চলছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলেন ?

শৈশব ও ব্যবসায়িক জীবন

ডোনাল্ড জন ট্রাম্প ১৯৪৬ সালে নিউ ইয়র্কের কুইন্সে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা, ফ্রেড ট্রাম্প, একজন সফল রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ছিলেন। তরুণ বয়সেই ডোনাল্ড বাবার কাছ থেকে ব্যবসায়িক কৌশল শেখেন। পড়ালেখা শেষ করে তিনি তার বাবার প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। তার বাবা চাইতেন ছেলেবেলা থেকেই যেন ডোনাল্ড কঠোর পরিশ্রমী হয়ে ওঠে। সে কারণে ট্রাম্পের বাবা অত্যন্ত ধনী হওয়া সত্তেও ছোটবেলায় ট্রাম্পকে দিয়ে খবরের কাগজ বিলি করার কাজ করিয়েছেন।

১৯৭১ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বাবার কোম্পানি ‘এলিজাবেথ ট্রাম্প অ্যান্ড সন’ এর দ্বায়িত্ব গ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে এটি ‘ট্রাম্প অর্গানাইজেশন’ নামে পরিচিতি পায়। ট্রাম্প তার বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ ডলারের ঋণ নিয়ে নিজের ব্যবসায়িক জীবন শুরু করেছিলেন। ট্রাম্পের বাবা মূলত নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় মধ্যবিত্তদের জন্য আবাসিক ভবন তৈরি করতেন। কিন্তু ট্রাম্পের ইচ্ছা ছিল সে ম্যানহাটনের দিকে বড় বড় বিলাসবহুল বিল্ডিং নির্মাণ করবে। সে সময় নিউইয়র্কের ম্যানহাটন বর্তমান সময়ের মত এত জাঁকজমকপূর্ণ ছিল না। বলতে গেলে ট্রাম্পের উদ্যোগেই ম্যানহাটান নতুন যৌবন লাভ করে। ট্রাম্পের বাবা এবং তার কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের আপত্তি সত্ত্বেও; তিনি তৎকালীন কমোডোর হোটেল কে সংস্কার করে হায়াত গ্র্যান্ড হোটেলে রূপান্তর করেন। তারপর থেকে একের পর এক বড় বড় ঝুঁকি নিয়ে ট্রাম্প ম্যানহাটনে গড়ে তুলেছেন ট্রাম্প টাওয়ার, ট্রাম্প প্লাজা সহ আরও অনেক বিলাসবহুল প্রকল্প। এর ফলে ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে নিউ ইয়র্কের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় ট্রাম্প একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি হয়ে উঠেন।

ট্রাম্পের মূলমন্ত্র

ট্রাম্পের বাবা তার ব্যবসায়িক ক্যারিয়ারের গুরু হলেও, তিনি ট্রাম্প কে খুব একটা মূল্যায়ন করতেন না। ট্রাম্পের বাবার কথা মত চললে ট্রাম্প হয়তো এত বড় ব্যবসায়ীতেও পরিণত হতে পারতেন না। ট্রাম্পের বাবার পরে তার জীবনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা আরেকজন ব্যক্তি হলেন রয় কন। রয় কন মূলত ট্রাম্পের আইনজীবী। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে দেশটির বহু হোমরা চোমরা ব্যক্তির সাথে রয় কনের ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।  

রয় কন ট্রাম্প কে শিখিয়েছিলেন কিভাবে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করা যায়। রয় কনের সহায়তায়ই ট্রাম্প ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে একের পর এক বিলাসবহুল আকাশচুম্বী অট্টালিকা তৈরি করেছে। এইসব বিল্ডিং নির্মাণের জন্য ট্রাম্পকে যদি ট্যাক্স দিতে হতো তাহলে ট্রাম্পের প্রকল্পগুলো শুরু থেকে কখনই এতটা লাভজনক হতো না।

রয় কনের দেওয়া তিন উপদেশ মেনে চলার কারণে, শুধু ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও ট্রাম্প আমূল বদলে যায়। পরবর্তীতে তার Trump: The Art of the Deal বইতে সেগুলো প্রকাশ করা হয়। উপদেশগুলো হল:

  1. Attack, attack, attack.
  2. Admit nothing, deny everything.
  3. Claim victory, and never admit defeat.

এই মূল মন্ত্র গুলো অন্তরে ধারণ করেই ট্রাম্প তার জীবনে উত্তোরোত্তর সাফল্য অর্জন করেছেন। ব্যবসায়িক জীবনের পর রাজনৈতিক জীবনেও শুধুমাত্র এই মূল মন্ত্র গুলোই ট্রাম্পকে সফলতা এনে দিয়েছে।

ট্রাম্প সব সময় তার ব্যবসায়িক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্লজ্জভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে গেছে। তার বিরুদ্ধে যতসব অভিযোগ এসেছে সব অভিযোগ প্রমাণিত সত্য হওয়া সত্ত্বেও ট্রাম্প সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এবং দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরও ট্রাম্প তার পরাজয় অস্বীকার করেছে।

চতুর ব্যবসায়ী

ট্রাম্প প্রধানত রিয়েল এস্টেট ব্যবসার জন্য পরিচিত হলেও, তিনি তার ব্যবসা শুধুমাত্র রিয়েল এস্টেট এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। ট্রাম্প এয়ারলাইন্স, গলফ কোর্স, ক্যাসিনো, হোটেল, সুগন্ধি, চকলেট, ভদকা, এমনকি পানির বোতল পর্যন্ত বাজারজাত করেছে। যদিও এর মধ্যে অনেক পণ্য জনপ্রিয় হয়নি। তবে ট্রাম্পের একটি উদ্দেশ্য সফল হয়েছে, আর তা হলো তার নাম ট্রাম্প ব্র্যান্ডটিকে চারিদিকের যত বেশি সম্ভব ছড়িয়ে দেওয়া।

ট্রাম্পের একটি চতুর ব্যবসায়ীক কৌশল হলো, ট্রাম্পের নামে বাজারজাত করার সকল পণ্য ট্রাম্প নিজে সরাসরি উৎপাদন করেনি। তিনি বিভিন্ন সুগন্ধি, চকলেট বা ভদকা কম্পানির সাথে কোলাবোরেশন করে, তাদেরকে শুধু ট্রাম্প ব্রান্ড নেম ব্যবহার করে পণ্য বাজারজাত করার অনুমতি দিয়েছে। বর্তমান সময়ের সোশ্যাল মিডিয়ার সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র জগতের বড় বড় তারকাদের অনেকেই এই পদ্ধতিতে তাদের নিজেদের নামে পণ্য বাজারজাত করে থাকে। কিন্তু ১৯৮০ এর দশকে এই ধারণায় পণ্য বাজারজাত করাটা ছিল সময়ের তুলনায় অনেক বেশি আধুনিক। এবং তৎকালীন সময়ের লোকজনের এই সম্পর্কে তেমন কোনো ধারনাও ছিল না। তাই তখনকার আমেরিকানরা মনে করতো ট্রাম্প নিশ্চয়ই বিরাট ধনী সে কারণেই সে একসাথে এত ধরনের পণ্য বাজারে ছাড়তে পেরেছে।

ট্রাম্প নিজেকে অনেক ধনী হিসেবে প্রচার করার জন্য, নিজেই ছদ্মনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও ট্যাবলয়েডের রিপোর্টারদের তার সম্পর্কে নানান ভালো ভালো খবর দিতেন। একবার ট্রাম্প নিজেই গোপন সংবাদদাতা হিসেবে দাবি করে বসে যে, ট্রাম্প তার বাবার ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের ৯০ শতাংশের মালিক। কিন্তু আদতে তখনও তিনি তার বাবার ব্যবসায় সামান্য পরিমাণ মালিকানা অর্জন করতে পেরেছিলেন।

ব্যবসার পাশাপাশি, ট্রাম্প একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবেও জনপ্রিয়তা পান। ২০০৪ সালে এনবিসি চ্যানেলে “The Apprentice” নামে একটি জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো শুরু হয়। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ট্রাম্প তার অর্গানাইজেশন এর জন্য নতুন নতুন কর্মীদের নিয়োগ দিতেন। সেই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের উচ্চারিত “You’re fired” শব্দটি সেসময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

ট্রাম্প পেশাদার রেসলিংয়ের মঞ্চেও বেশ পরিচিত মুখ। WWE এর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার ট্রাম্প অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন।

রাজনীতিতে প্রবেশ

অতীতে ডোনাল্ড ট্রাম্প রাজনীতিবিদদের কর্মকাণ্ড খুব একটা ভালো চোখে দেখতেন না। তবে সময়ের সাথে সাথে তিনি রাজনীতিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তবে ২০১৫ সালে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে তিনি প্রথমবারের মত সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হন। ট্রাম্প এর মূল প্রতিশ্রুতিগুলো ছিলো অবৈধ অভিবাসন রোধ, সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণ, মুসলিম দেশগুলো থেকে অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা এবং ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট’ নীতিমালা, যা মূলত দেশের অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার ছিল।

ট্রাম্পের মূলমন্ত্র অনুযায়ী, ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণাত্নক প্রচারণা চালানোর মাধ্যমে ট্রাম্প তার প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যাম্পেইন শুরু করে। ট্রাম্পের প্রচারণা নানা বিতর্কে জড়ালেও, সাধারণ আমেরিকানদের মধ্যে তার বক্তব্য জনপ্রিয়তা পায়। একদিকে ধনী ব্যবসায়ী, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলা একজন দৃঢ় নেতা হিসেবে শেতাঙ্গদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে জনগণের ভোটে ট্রাম্প হেরে গেলেও, পরবর্তীতে ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির চার বছরে নানা ইস্যুতে আমেরিকানরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। তার সময়ে কর্পোরেট ট্যাক্স কমানো, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কার প্রচেষ্টা এবং সবশেষে করোনা মহামারি মোকাবেলার মত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসন ব্যাপক বিতর্কিত হয়ে পড়ে। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি, বাণিজ্য চুক্তি এবং চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া বিশ্ব রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল।

অভিশংসন

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মার্কিন ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুইবার অভিশংসন করা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার অভিশংসিত হন ২০১৯ সালে। অভিযোগ ওঠে যে ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন যেন তিনি জো বাইডেনের ছেলে, হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করেন। হান্টার বাইডেন তখন ইউক্রেনের একটি গ্যাস কোম্পানির বোর্ড মেম্বার ছিলেন। অভিযোগ করা হয়, ট্রাম্প সামরিক সহায়তা এবং সরকারি সফরের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে প্ররোচিত করেন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ, প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুটি ধারা আনা হয়: ১. ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ২. কংগ্রেসের কাজে বাধা প্রদান। প্রতিনিধি পরিষদে এই দুটি ধারায় ভোট গৃহীত হয় এবং উভয় ধারাতেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে মার্কিন পার্লমেন্টের উচ্চকক্ষ সেনেটে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দল সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার কারণে, ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হননি এবং তিনি প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকেন।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় অভিশংসন ঘটে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে, তার মেয়াদের শেষ পর্যায়ে। ২০২০ সালের নির্বাচনের পরে, ট্রাম্প তার চিরাচরিত স্বভাব অনুযায়ী নির্বাচনী পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকার করে। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি, যখন মার্কিন কংগ্রেস ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্ত অনুমোদন করছিল, তখন ট্রাম্পের আহবানে ট্রাম্পের সমর্থকরা নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ক্যাপিটল হিল ভবনে হামলা চালায়। ট্রাম্প তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন এবং তার সমর্থকদের “লড়াই” করতে বলেন, যা অনেকের মতে হামলা উসকে দেয়। এটি ছিল মার্কিন গণতন্ত্রের ইতিহাসে অন্যতম কলঙ্কিত একটি ঘটনা।

এর প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে প্ররোচনার অভিযোগে অভিশংসন প্রক্রিয়া চালানো হয়। প্রতিনিধি পরিষদে ভোটাভুটিতে ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি কিছু রিপাবলিকানও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে অভিশংসন বিল পাশ করে। কিন্তু আবারো পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন অর্জন না হওয়ায়, ট্রাম্প তার ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে চূড়ান্ত অভিশংসন থেকে রক্ষা পায়।

২০২৪ এর নির্বাচন

২০২০ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর, ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবারো প্রেসিডেন্ট হওয়া, শুধু ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনেই নয় মার্কিন রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেও এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এর আগে শুধুমাত্র একজন প্রেসিডেন্ট এ ধরনের প্রত্যাবর্তন করতে পেরেছিলেন।

ক্যাপিটল হামলার ঘটনার পর অনেকেই মনে করেছিলেন, ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু তার প্রতিপত্তি এবং শক্তিশালী সমর্থনঘাঁটি তাকে আবারও নির্বাচনে ফিরে আসার শক্তি যোগায়। সর্বশেষ নির্বাচনী প্রচারণার সময় পেনসিলভেনিয়ার বাটলার শহরে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। যার ফলে ট্রাম্পের ডান কানের ওপরের অংশে আঘাত লাগে।

২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প জনগণের ভোটেও ভূমিধ্বস বিজয় অর্জন করেন। যদিও এর পেছনে অনেকেই ট্রাম্পের সফলতার চেয়ে বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই বড় করে দেখছেন। যদিও এখনো ইলেক্টোরাল কলেজের চূড়ান্ত ভোট বাকি রয়েছে; তবে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন সেখানেও ট্রাম্প অনায়াসেই উৎরে যাবেন।

তবে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও, তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা এখনও চলামান রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রধান মামলার অভিযোগগুলো হলো: ১. ব্যবসায়িক নথি জালিয়াতি ২. হোয়াইট হাউজ থেকে বের হওয়ার পরেও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বহু গোপন নথি নিজের কাছে রেখে দেয়া (গোপন নথি অপব্যবহার) ৩. ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা এবং ৪. জর্জিয়ায় নির্বাচন প্রভাবিত করার চক্রান্ত। এসব মামলায় তার সাজা হয় কিনা এবং সাজা হলেও তিনি নিজে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন কিনা তাই এখন দেখার বিষয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়া মার্কিন রাজনীতিতে অত্যন্ত আলোচিত একটি ঘটনা। প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবার দায়িত্ব পালন করার সময়ে তিনি অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন। তবে ট্রাম্পের স্বভাবসুলভ উগ্রতার কারণেই, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব রাজনীতিকে ট্রাম্প আরো খারাপ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিবেন বলেই, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *


দিন
ঘণ্টা
মিনিট
সেকেন্ড
আমাদের লাইভ ক্লাস শেষ হয়েছে, তবে আপনি এখন ফ্রি রেকর্ডেড কোর্সে ইনরোল করে দেখতে পারবেন।
আপনার রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আপনার জন্য একটি একাউন্ট তৈরি হয়েছে। প্রদত্ত ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

কোর্সের তারিখ: ০৩/১০/২০২৫
সময়: রাত ৯টা থেকে
(বাংলাদেশ সময়)

আপনার সঠিক - নাম, ইমেইল দিয়ে
Sign Up এ ক্লিক করুন।