কর্ডোবা মসজিদ

maxresdefault (42)
কি কেন কিভাবে

কর্ডোবা মসজিদ

ইসলামি স্থাপত্যের এক দ্রুপদী নিদর্শন কুরতুবা মসজিদ। যা কর্ডোভা মসজিদ বা কর্ডোভা ক্যাথিড্রাল মসজিদ হিসেবে পরিচিত। মসজিদটি স্পেনের কর্ডোভা প্রদেশে অবস্থিত। তৎকালীন সময়ে স্পেনে মুসলিম শাসনের অধীনে এই বিখ্যাত মসজিদটি তৈরী করা হয়েছিল। এই মসজিদের পরতে পরতে ছড়িয়ে রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস। ১৯৮৪ সালে ঐতিহাসিক এ মসজিদটিকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃত দেয়া হয়েছে। অতীতে মুসলিমদের দ্বারা নির্মিত হয়ে, ৫০০ বছর মুসলিমদের মালিকানায় থাকলেও, বর্তমানে এই মসজিদে মুসলমানদের নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ নিষেধ। কারণ স্পেনের সরকার মসজিদটিকে ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের হাতে সমর্পন করেছে।

যে মসজিদে নামাজ পড়া নিষেধ !

অতীতে স্পেন ও পর্তুগাল অঞ্চল আল আন্দালুস নামে পরিচিত ছিল। উমাইয়া যুবরাজ প্রথম আব্দুর রহমান আন্দালুসে কর্ডোভা আমিরাত প্রতিষ্ঠা করেন। ৭৮৫ সালে আব্দুর রহমান তার খিলাফতের কেন্দ্র হিসেবে এই মসজিদ নির্মান করেছিলেন। সুলতান নিজেও প্রতিদিন এক ঘন্টা করে মসিজদ নির্মানের কাজে শ্রম দিতেন। ৭৮৮ সালে খলিফা আব্দুর রহমান মারা যাবার সময়, মসজিদটির নির্মান কাজ প্রায় শেষের দিকে ছিল। সেই সময়ের তুলনায় মসজিদটি খুব দ্রুত নির্মান করা হয়েছিল। যা ছিল তৎকালীন সময়ের নির্মাণ শিল্পের বিষ্ময়। আন্দালুসে মুসলিম শাষনের সময়ে, দিনে দিনে মুসলিম দের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কর্ডোভা মসজিদ তিনবার ব্যাপক আকারে সম্প্রসারণ করা হয়েছিল। প্রথম আবদুর রহমানের মৃত্যুর পর তার ছেলে হিশাম খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তিনিও মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে অবদান রাখেন। ৭৯৩ সালে খলিফা হিশাম মসজিদটির প্রাথমিক কাজ শেষ করেন। প্রাথমিক কাজ শেষে কুরতুবা মসজিদের দৈর্ঘ্য হয় ৬০০ ফুট এবং প্রস্থ ৩৫০ ফুট। খলিফা হিশামের পর উমাইয়াদের সব শাসকই মসজিদের উন্নয়ন অব্যাহত রাখেন। দশম শতাব্দীতে খলিফা তৃতীয় আবদুর রহমান কুরতুবা মসজিদের পূর্ণাঙ্গ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন। তখন মসজিদের আয়তন দাঁড়ায় ১ লক্ষ ১০ হাজার ৪০০ বর্গ ফুট। ৫০ দরজার এ বিশাল স্থাপনায় রয়েছে ১২৯৩টি স্তম্ভ। অনিন্দ্য সুন্দর এই মসজিদের থামগুলো নির্মিত হয়েছে মার্বেল, গ্রানাইড, জেসপার ও অনিক্স পাথর দিয়ে। সম্পূর্ণ নির্মান কাজ সম্পন্ন হবার পর মসজিদটি বিশ্বের অন্যতম সেরা স্থাপত্যশৈলীর মর্যাদা লাভ করে। একজন সিরিয়ান স্থপতি মসজিদটির নকশা করেছিলেন। পরবর্তীতে বহু মসজিদের নকশার জন্য কর্ডোভা মসজিদকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। দশম শতাব্দীতে এটি ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ মসজিদ। তখন মুসল্লী ধারণ ক্ষমতার দিক থেকে, মক্কার মসজিদুল হারামের পরেই ছিল কর্ডোভা মসজিদের অবস্থান।


বহু ধাপে সংস্কার এবং সম্প্রসারণের সময় খলিফা দ্বিতীয় আল হাকাম মসজিদের অন্যতম আকর্ষনীয় একটি অংশ যুক্ত করেন। তা হল এই মসজিদের চোধ ধাঁধানো মিহরাব। এই মিহরাবটি সাধারণ মসজিদের মিহরাবের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এর ভেতরে প্রবেশ করলে মনে হবে এটি যেন পর জনমের প্রবেশ দ্বার। মসজিদের মিহরাবের উপরের রয়েছে অসাধারণ এক গম্বুজ। অতীতে মিহরাবের কাছে একটি উঁচু মিম্বরও ছিল। যা বিভিন্ন রঙের ৩৬ হাজার কাঠের খন্ড এবং মূল্যবান হাতির দাঁত দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এছাড়াও মিম্বারের ওপর ছিলো নানা রকমের মূল্যবান পাথরের কারুকাজ। মিম্বরটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছিল দীর্ঘ সাত বছর। এর পাশেই তৈরি করা হয়েছিল ১০৮ ফুট উঁচু মিনার। যাতে ওঠানামার জন্য ১০৭ টি ধাপ বিশিষ্ট সিঁড়ির ছিল। মসজিদের মধ্যে ছোট বড় ১০ হাজার ঝাড়বাতি জ্বালানো হতো। তার মধ্যে সর্ববৃহৎ তিনটি ঝাড়বাতি ছিল রুপার, এবং বাকিগুলো ছিল পিতলের তৈরি। বড় বড় ঝাড়ের মধ্যে এক হাজার ৪৮০ টি প্রদীপ জ্বালানো হতো। শুধু তিনটি রুপার ঝাড়েই ৩৬ সের তেল পোড়ানো হতো। সেসময় মসজিদের তদারকিতে ৩০০ জন খাদেম নিয়োজিত ছিলেন।
কুরতুবা মসজিদ ছিল তৎকালীন মুসলিম শাসনের শরয়ী আইন ও শালিস কেন্দ্র। এখানে গভীর আধ্যাতিœক সাধনা ও জ্ঞান চর্চা করা হত। বহু বিখ্যাত ইসলামি পন্ডিত এই মসজিদে বসে কুরআন ও হাদিদের পাঠ শিক্ষা দিতেন। বহু ইউরোপীয় পন্ডিতও এখান থেকে তাদের উচ্চতর শিক্ষা লাভ করেছেন। বিখ্যাত তাফসির গ্রন্থ তাফসির আল কুরতুবি র সাথে এই মসজিদের এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আল্লামা কুরতুবি (রহ.) এই মসজিদেই তার রচিত তাফসিরে কুরতুবির পাঠ দিতেন। মসজিদে বসেই ইলমে তাসাউফের শিক্ষা দিতেন শায়খুল আকবর সুফি ইমাম ইবনে আরাবি। বাকি ইবনে মাখলাদ, হজরত ইয়াহইয়া ইবনে ইয়াহইয়া আন্দালুসির মতো ব্যক্তিত্বও এ মসজিদে ইলমে দ্বীনের পাঠদান করতেন। হজরত ইবনে হাজাম জাহেরি ইলমে ফিকহের মাসয়ালা-মাসায়েল নিয়ে এখানে আলোচনা করতেন। এছাড়াও বহু মুসলিম পন্ডিত কর্ডোভা মসজিদে তাদের জ্ঞান চর্চা এবং পাঠদান করেছেন।


মুসলিমরা প্রায় ৫০০ বছর এই অঞ্চলে রাজত্ব করার পর, আন্দালুসে মুসলিম স¤্রাজ্য হুমকির মুখে পড়ে। ১২৩৬ সালে রাজা তৃতীয় ফার্ডিনান্দ ও রাণী ইসাবেলা নির্বিচারে মুসলিমদের হত্যা করে। তখন খ্রিষ্টানরা মুসলিম অধিকৃত অঞ্চল দখল করে নেয়। খ্রিষ্টানরা কর্ডোভা মসজিদে আসার পর, এর নির্মান শৈলী এবং কারুকার্য দেখে অত্যন্ত বিষ্ময় প্রকাশ করে। তারা মনে করে, অসাধারণ এই স্থাপনা ভেঙে ফেলা পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই খ্রিষ্টানরা কর্ডোভা মসজিদকে গীর্জায় পরিণত করে। তার প্রায় ২০০ বছর পরে, ১৫২৩ সালে খ্রিষ্টানরা একটি অস্বাভাবিক সিদ্ধান্ত নেয়। তারা মসজিদের কেন্দ্রীয় অংশ ভেঙে একটি নতুন ক্যাথিড্রাল বা গীর্জা তৈরীর পরিকল্পনা করে। এই অংশটি নির্মান করতে আরো তিনশ বছর সময় লাগে। মসজিদের ভেতরে ক্যাথিড্রাল তৈরী করার কারণে এই স্থাপনাটি, ক্যথিড্রাল মস্ক অব কর্ডোভা বা, কর্ডোবার কাথিড্রাল মসজিদ হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পায়। এক সময় ইসলামি শাসনের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে পরিচালিত হলেও, বর্তমানে এই মসজিদে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ নিষেধ। মসজিদটি স্থাপনের পর থেকে একটানা ৫০০ বছর মুসলিমরা এখানে নামাজ আদায় করেছে। ৫০০ বছরের প্রতিদিন দিনে ৫ বার মসজিদের মিনার থেকে আজান দেওয়া হয়েছে। আর বর্তমানে সেই মিনারে মাইকের বদলে লাগানো হয়েছে গীর্জার ঘন্টা। মুসলিমদের বিতাড়িত করার পর থেকে কর্ডোভা মসজিদে কোন আজান ও নামাজ হয়নি। এখানে সেজদা দেওয়া তো দূরের কথা, মুসলিমরা এখানে রুকু ও করতে পারে না। মুসলিমদেরকে ইবাদত করা থেকে বঞ্চিত করতে, মসজিদের বিভিন্ন জায়গায় সিকিউরিটি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এবং বিশেষ সিকিউরিটি ফোর্স বিষয়টি সার্বক্ষণিক নজরদারি করে।
কর্ডোভা মসজিদে নামাজ আদায় সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও, কয়েকজন গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পেরেছেন। ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত কবি, দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ আল্লামা ইকবাল, ১৯৩৩ সালে স্পেন সফরকালে এই মসজিদ পরিদর্শন করেন। তিনি মসজিদে প্রবেশ করেই, মসজিদের দরজা বন্ধ করে উচ্চস্বরে আজান দেন। দীর্ঘ সাতশ’ বছর পর কর্ডোভা মসজিদে এটিই ছিল প্রথম আজান। আজানের পর জায়নামাজ বিছিয়ে আল্লামা ইকবাল দু’রাকাত নামাজ আদায় করেন। তার নামাজের এমন এক অবস্থা সৃষ্টি হয় যে, তিনি বেহুঁশ হয়ে যান। জ্ঞান ফেরার পর তিনি অশ্রুসিক্ত নয়নে কবিতার মতো করে মোনাজাত করেন। ঐতিহাসিক কর্ডোভা মসজিদে নামাজ পড়ার আবেগকে তিনি ৭টি কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করেন। এরপর ১৯৭৪ সালে সাদ্দাম হোসেন ইরাকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্পেন সফর করেন। সেই সফরে তিনি স্প্যানিশদের আতিথেওতায় কর্ডোভা মসজিদ ভ্রমণ করেন। এবং সেই ভ্রমণের এক পর্যায়ে সাদ্দাম হোসেন কর্ডোভা মসজিদের মিহরাবে নামাজ আদায় করেন। স্পেন সফরে আসা আরব বিশ্বের নেতা, আমির এবং রাজপুত্ররা কয়েকবার এখানে নামাজ আদায় করার সুযোগ পেয়েছেন।


২০০০ সালের পর থেকে সমগ্র স্পেনের মুসলিমরা এই মসজিদে নামাজ আদায় করার জন্য অনেক তদবির করেছে। কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। ২০১০ সালে একদল মুসলিম পর্যটক এখানে রুকু করার অনেক চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদেরকে বাঁধা দেওয়া হয়। মুসলিমদের দাবির মুখে মসজিদের মালিকানা নির্ধারণের জন্য ২০১৫ সালের পরে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু ২০১৯ সালে কর্ডোভার মেয়র, এই মসজিদের মালিকানা নির্ধারণ সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কাজ বন্ধ করে দেয়। এবং সে বলে ভবিষ্যতে এই কমিশনের কাজ পুনরায় চালু করারও কোন সম্ভাবনা নেই। তুরষ্কের হায়া সোফিয়াকে ন্যায় সঙ্গতভাবে মসজিদে রুপান্তর করার পরও পশ্চিমা ভন্ডরা বহু বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। অথচ মুসলমানদের মালিকানার এমন এক ঐতিহাসিক নিদর্শনকে তারা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। কিন্তু দ্বিমুখী পশ্চিমা প্রতারকরা এ বিষয়ে কোন আলোচনাও করতে চায় না। শুধু স্পেন নয়, গ্রিস, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও হাঙ্গেরি সহ বলকান অঞ্চলে অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর সেখানকার বহু মসজিদকে জোরপূর্বক গির্জায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। এবং অনেক মসজিদ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অতীতে ইসলাম ধর্ম এবং ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির কারণেই, স্পেন উন্নতির শিখরে আরোহন করতে পেরেছিল। বিপরীতে সেই ইসলাম কেই অত্যন্ত ঘৃণ্যভাবে স্পেন থেকে অপসারণ করা হয়েছে। যাদের কারণে তারা উন্নতির শিখরে আরোহন করতে পেরেছে, তাদের প্রতি নূন্যতম কৃতজ্ঞতাটুকুও নেই। বরং ইসলামকে স্পেনের মাটি থেকে মুছে ফেলতে সকল রকমের অপচেষ্টা করা হয়েছে।
আন্দালুসে মুসলিম শাসন শুধু স্পেন বা পর্তুগাল নয়, বরং সমগ্র ইউরোপে উন্নত সভ্যতা গড়ে তুলতে ব্যাপক অবদান রেখেছিল। ১০০০ সালের দিকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর ছিল কর্ডোভা। তৎকালীন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মহানগর কর্ডোভায় প্রায় ২ লক্ষ বাড়ি, ৬ হাজার মসজিদ, ৯০০ টি পাবলিক বাথ, ৫০টি হাসপাতাল এবং বিশাল বিশাল বাজার ছিল। জমকালো শহর, দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা, প্রশস্ত রাস্তা, সড়ক বাতি, মনোরম উদ্যান, কৃত্রিম ঝর্ণা ইত্যাদি বিষয়ের সাথে পশ্চিমাদের পরিচয় করিয়েছিল মুসলিমরা। শুধু তাই নয়, মুসলিমদের স্থাপিত উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, গ্রন্থাগার এবং সাংস্কৃতিক অবকাঠামো থেকে স্প্যানিশরা ব্যাপক উপকৃত হয়। বস্তুত কর্ডোভাকে কেন্দ্র করে সমগ্র আন্দালুস ছিল তৎকালীন বিশ্বের আন্তর্জাতিক জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার প্রাণ কেন্দ্র। তখন ইউরোপ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলই ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন; কিন্তু, কর্ডোভা ছিল এক আলোকজ্জ্বল শহর। সেকারণে কর্ডোভা কে বলা হত ইউরোপের বাতিঘর। আজকের ইউরোপীয় সভ্যতা এবং উন্নত জ্ঞান বিজ্ঞানের পেছনে মুসলিমদের যে কতটা অবদান আছে, তা হয়ত আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *


দিন
ঘণ্টা
মিনিট
সেকেন্ড
আমাদের লাইভ ক্লাস শেষ হয়েছে, তবে আপনি এখন ফ্রি রেকর্ডেড কোর্সে ইনরোল করে দেখতে পারবেন।
আপনার রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আপনার জন্য একটি একাউন্ট তৈরি হয়েছে। প্রদত্ত ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

কোর্সের তারিখ: ০৩/১০/২০২৫
সময়: রাত ৯টা থেকে
(বাংলাদেশ সময়)

আপনার সঠিক - নাম, ইমেইল দিয়ে
Sign Up এ ক্লিক করুন।