পৃথিবীর বিভিন্ন গোপন সংগঠন গুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম ইলুমিনাটি। ধারণা করা হয় মাইকেল জ্যাকসন থেকে শুরু করে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, বিল গেটস থেকে শুরু করে বারাক ওবামা পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় অসংখ্য ব্যক্তি ইলুমিনাটির সদস্য। ইলুমিনাটির যাত্রা শুরু হয়েছিলো জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশে।
১৭৭৬ সালে এক জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অ্যাডাম ওয়েশপ্ট এই সিক্রেট সোসাইটি বা গোপন সংঘের যাত্রা শুরু করেন। ইলুমিনাটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিলো সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করা এবং জনজীবনের ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় প্রভাব কমানো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অ্যাডাম প্রথমে তার চার জন ছাত্রকে নিয়ে এ সংঘের যাত্রা শুরু করে। তারা ইলুমিনাটির প্রতীক হিসাবে মিনার্ভার প্যাঁচা কে বেছে নেয়। মিনার্ভা হলো রোমান রূপকথার জ্ঞানের দেবী। ইলুমিনাটির সদস্যদের পরিচয় গোপন রাখতে এর প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডাম সকলের ছদ্মনাম ঠিক করে এবং নিজের ছদ্মনাম রাখে স্পার্টাকাস। সেসময় ইহুদি, প্যাগান, নারী ও অন্য কোনো গোপন সংগঠনের সদস্যদের জন্য ইলুমিনাটির সদস্যপদ নিষিদ্ধ ছিলো।
১৭৮৪ সালে ইলুমিনাটির সদস্য সংখ্যা হয়ে দাড়ায় ৬৫০। অ্যাডাম এই গোপন সংঘের কথা স্বভাবতই গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সদস্য সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ইলুমিনাটির কথা আর গোপন থাকেনি। ১৭৮৫ সালে বাভারিয়ার শাসক চার্লস থিওডর সকল ধরণের গোপন সংগঠন নিষিদ্ধ করে। তখন অ্যাডাম ফ্রান্সে পালিয়ে যায় এবং ইলুমিনাটির অনেক গোপন নথিপত্র জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে ১৭৯৮ সালে জন রবিসন প্রুভস অফ কনস্পিরেসি নামে একটি বই প্রকাশ করে। এই বইতে তিনি ফরাসী বিপ্লবের পেছনে ইলুমিনাটির জোড়ালো প্রভাব আছে বলে দাবী করেন।
বর্তমানে বহু সংগঠন নিজেদের ইলুমিনাটি হিসেবে দাবী করে। এরা কোনো ধরণের গোপনীয়তার ধার ধারেনা। এমনকি এদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট, ফেসবুক, টুইটার সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ফ্যানপেজও আছে। সদস্য সংগ্রহের জন্য তারা রীতিমত বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এদের সাথে সেই বাভারিয়ান ইলুমিনাটিদের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই।
ভিডিওটি নিয়ে আলোচনা